কখন মধু খেলে উপকার বেশি হয় - মধু খাওয়ার নিয়ম
মধু খেতে যেমন মিষ্টি তেমনি সুস্বাদু এবং এর রয়েছে অনেক উপকারিতা। মৌমাছি বিভিন্ন ফুলের নির্যাস থেকে মধু তৈরি করে। মধুর রয়েছে নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা। মধু খাওয়ার নিয়ম আছে । নিয়ম এবং সময় মেনে মধু খেলে বিভিন্ন রোগ নিরাময় হয়। প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত মধু একটি উচ্চ মানের খাবার। মধু খাওয়ার নিয়ম এবং কখন মধু খেলে উপকার বেশি হয় তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
মধু খাওয়ার নিয়ম:
মধু দিনের যে কোনো সময় খাওয়া যায়। তবে এর সঠিক সময় হচ্ছে সকালে খালি পেটে ২ চামচ বা ৩০ গ্রাম মধু হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খাওয়া। শরীর দুবর্লতা, অবসাদ, মানসিক চাপ কমিয়ে ভালো ঘুম পেতে চাইলে এক চামচ মধুর সাথে কয়েক ফোটা লেবুর মিশিয়ে খান। সরবত হিসেবে পানির সাথে চিনি না দিয়ে মধু দেওয়া যেতে পারে।
যারা ওজন কমাতে চান তারা প্রতিদিন সকালে এক কাপ গরম পানিতে এক চামচ মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। চা বা কফিতে চিনির বিকল্প হিসেবে মধু ব্যবহার করুন। ছোট বাচ্চা ও বয়স্ক লোকের মধু সেবনে সচেতন থাকতে হবে। মধুতে বটুলিজম নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যা ছোট বাচ্চা ও বৃদ্ধলোকের শরীরের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা কিছু ধারনা পেয়েছি । এখন কখন খাবো কখন খেলে এর উপকারিতা বেশি তা নিয়ে আলোচনা করব।
মধু খাওয়ার উপকারিতা:
- শরীর দুর্বলতা কমায়:
- মধু ঘুম বাড়ায়:
- শ্বাসকষ্ট ভালো হয়:
- শরীর গরম রখে:
- যৌন দুর্বলতা দূর করে:
- পেট ভালো রাখে:
- ত্বকের যত্নে মধু:
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা:
মধু ও কালোজিরাকে সকল রোগের মহঔষধ বলা হয়ে থাকে। মধুর সাথে কালোজিরা খেলে সর্দি কাশি মাথা ব্যাথা,জ্বর.শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি রোগ ভালো হয়। প্রতিদিন ২ চামচ মধুর সাথে ১ চামচ কালজিরা মিশিয়ে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, যৌন দুর্বলতা নিরাময় হয়। এবং ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য মধু ও কালজিরা বিশেষ ভুমিকা রাখে।
কালেজিরাতে আছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল যা শরীরের বিভিন্ন রোগের জীবানু ধ্বংস করে। সকালে মধুর সাথে কালজিরা খেলে প্রতিটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে এবং নিয়মিত পেট খারাপের সমস্যা সমাধান হয়।
গর্ভাবস্থায় মধু খাওয়ার উপকারিতা:
মধুতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকে যা গভর্বতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মধুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা কমায় । তাই গর্ভবতী মায়েরা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সমাধানে মধু খেতে পারেন। গর্ভবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্ন অনিদ্রা সমস্যা হয়ে থাকে । এসব সমস্যায় মধু সেবন করুন। গর্ভবস্থায় মধু খাওয়া নিরাপদ তবে এলার্জি থাকলে সেবন না করাই ভালো। আর যে মধু খাবেন সেটা খাঁটি কি না তা যাচাই করে নিবেন।
গর্ভবতী মায়েরা চিনির বিকল্প হিসেবে মধু খেতে পারেন। প্রাচিনকাল থেকে মধু খুব ভালো প্রাকৃতিক খাবার। সকলেই এই খাবার খেতে পারে। প্রাচিনকালে মধুর সাথে বিভিন্ন গাছের শেকড় লতাপাতা মিশিয়ে রোগের ঔষধ বানানো হতো। তখন থেকে এর যথাযত ব্যবহার হয়ে আসছে। মধুর অনেক উপকারিতা রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না।
কখন মধু খেলে উপকার বেশি হয়:
দিনের যে কোনো সময় মধু সেবন করা যেতে পারে। মধু খেতে যেমন স্বুসাদু তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। এছাড়া রক্তশূণ্যতা, অনিদ্রা, কোষ্ঠকাঠিন্ন, ভালো ঘুম ও রুপচর্চাতেও মধু বিশেষ ভূমিকা রাখে। কখন মধু খেলে উপকার বেশি হয় তা নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে । আসুন জেনে নিই মধু খাওয়ার নিয়ম এবং কখন খাবো। সকালে খেলে ভালো হয় নাকি রাতে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে বিস্তারিত অোলোচনা করা হলো
সকালে মধু খাওয়ার উপকারিতা:
সকালে খালি পেটে গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে খেলে অতিরিক্ত ওজন কমে যায়। পাকস্থলী পরিষ্কার রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সকালে মধু খান। সর্দি , কাশি ,শ্বাসকষ্ট দূর করতে সকালে মধু খাওয়ার ভালো মধুতে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন ,এনজাইম ও মিনারেল যা শারীরিক দুর্বলতা দূর করে ও শরীরে এনার্জি যোগায়।
মধুর সাথে দারচিনি মিশিয়ে খেলে রক্তের খারাপ কলেস্টেরল ১০ ভাগ কমে যায় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমে যায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়। চিনির পরিবর্তে মধু খেলে যেমন মিষ্টি পাওয়া যায় তেমনি শরীরে শক্তি যোগায় ও কর্মক্ষমতা বাড়ায়।খালি পেটে মধু খেলে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ নিরাময় হয়।
রাতে মধু খাওয়ার উপকারিতা:
রাতে ঘুমানোর আগে মধু খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। যেমন ঘুম ভালো হয় , ওজন কমায়, ক্ষুধা কমায়,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ইত্যাদি। ঘুমানোর ৩০ মিনিট পূর্বে মধু খেলে হজম শক্তি বাড়ে ও ঘুমের মান উন্নত হয়। রাতে কাঁচা মধু খাওয়া ভালো। তবে চা বা কফির সাথে ও খাওয়া যায়।
রাতে মধু খেলে সারাদিনের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হয়ে যায়। রাতে মধু খেলে বিভিন্ন ক্ষত নিরাময় হয় এবং ত্বক হয় উজ্জল। দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্ন দূর হয়। এছাড়া শীতে প্রতিদিন রাতে মধু খেলে শরীর গরম থাকে । মধু আমাদের হাড় ও দাঁত ভালো রাখে।
লেখকের মন্তব্য:
আজকের আলোচনায় আমরা মধু খাওয়ার নিয়ম এবং কখন মধু খাবেন , মধুর উপবারিতা সম্পর্কে জেনছি। মধুর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতার জন্য মধুকে সুপার ফুড বলা হয়। খাঁটি মধু সংগ্রহ করে নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে মিলবে শরীরের নানা উপকার। তবে শিশু , বৃদ্ধ ও মধুমেহ রোগিরা মধু খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url