ইয়োগা বা যোগব্যায়াম কি? ইয়োগার ২০ টি উপকারিতা সম্পর্কে জানুন।
ইয়োগা একটি সংস্কৃত শব্দ যার বাংলা অর্থ যোগ বা সমন্বয় সাধন করা। ইয়োগা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ইয়োগা শুধু একটি ব্যায়াম নয় এটি একটি সাধনা। সাধারণত ব্যায়াম মানুষের শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটায় কিন্তু ইয়োগা শুধু শরীর না মানুষের মনেও শান্তি এনে দেয়। নিয়মিত ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করলে মানুষ বিভিন্ন রকম রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে। অনেকে ইয়োগা ও ব্যায়াম কে গুলিয়ে ফেলেন। সারা বিশ্বে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত একুশে জুন বিশ্ব ইয়োগা দিবস পালন করা হয়।
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা ইয়োগা বা যোগব্যায়াম কি,যোগব্যায়ামের প্রকারভেদ,ইয়োগার ২০ টি উপকারিতা,ইয়োগা করার সময় ও নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ইয়োগা বা যোগব্যায়াম কি :
যোগব্যায়াম ভারতবর্ষের বহু প্রাচীনকালের একটি পুরনো শরীর চর্চা।এখন প্রায় সারা বিশ্বেই ইয়োগা বা যোগ চর্চা চলছে। ইয়োগা বা যোগব্যায়ম হল সেই শরীরচর্চা যা মানুষের মন ও শরীরকে এক সূত্রে গাঁথে বা যুক্ত করার প্রাচীন পদ্ধতি। ইয়োগা আবার দুইটি নামে পরিচিত যোগাসন ও যোগব্যায়াম।ইয়োগা মানুষের মস্তিষ্ক ও চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের নানা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে।মানুষের দেহ মন ও শক্তি এই তিনটি জিনিসকে এক সূত্রের সমন্বয় ইয়োগার কাজ।
ইয়োগা বা যোগব্যায়ামের প্রকারভেদ :
- পদ্মাসন
পদ্মাসন করতে হলে পা দুটি একটির ওপর অপরটি এমনভাবে অবস্থান রাখতে হবে যেন পদ্মের পাপড়ির মত দেখা যায়। দান উরুর ওপর বাম পা এবং বাম উরুর উপর ডান পা এ অবস্থায় হাঁটু মাটিতে ঠেকানো অবস্থায় থাকবে। মেরুদন্ড সোজা রাখতে হবে ডান হাত বাম অনুর উপর এবং বাম হাতের উপর রাখতে হবে। পদ্মাসন যোগের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন উপকার হয়। যেমন পায়ের ব্যথা দূর হয়ে যায়, মেরুদন্ড সরল ও নমনীয় হয়ে যায়, পায়ের পেশিগুলো সবল হয়,ধৈর্য বৃদ্ধি পায় এবং পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ে।
- বজ্রাসন
দুটি পা পিছনের দিকে দিয়ে গোড়ালি দুটো কিছুটা ফাঁক রেখে তার উপরে বসতে হয়। মেরুদন্ড সোজা রাখা অবস্থায় দুই উরুর ওপর দুই হাত সোজা করে রাখতে হয়। যতটা সম্ভব শ্বাস-প্রসার স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে হবে। প্রথম প্রথম অসুবিধা হলেও অভ্যাস হয়ে গেলে পরে অনেকটা সহজ হয়ে যায়। বজ্রাসন যোগ ব্যায়ামের বিশেষ উপকারিতা হলো বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেটের নানা রোগ ভালো হয়। নিয়মিত বজ্রাসন করলে পায়ের বাত ভালো হয়ে যাই এবং পেশী ও স্নায়ু সবল হয়।
- ভুজঙ্গাসন
কোমর থেকে উপরের অংশ সোজা করে উপরে তুলতে হবে। ভঙ্গজ বা সাপের ফণা তুললে যেমন হয় ঐরকম দেখাবে। পা দুটি সোজা রেখে মাটিতে হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। বুকের দু'পাশে দু হাতের তালু এমন ভাবে রাখতে হবে যেন কনুই কোমরের সঙ্গে লেগে থাকে। হাতে ভর না দিয়ে কোমরের জোরে বুক উপরে তোলার চেষ্টা করতে হবে। কমপক্ষে এক মিনিট পর্যন্ত এ অবস্থান রাখার চেষ্টা করুন। ভুজঙ্গাসন্নের মাধ্যমে কোমর, বুক, পিঠ ইত্যাদি ভালো রাখা যাই।এই আসনের মাধ্যমে মেরুদন্ডের বক্রতা দূর হয় এবং মেরুদন্ড সামনের অংশে স্নায়ুতন্ত্র গুলি সরল হয়ে থাকে।
- বৃক্ষাসন
প্রথমে দুই পা পাশাপাশি রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। তারপর ডান পা তুলে বা পায়ের উরুর ওপর এমন ভাবে রাখতে হবে যেন পায়ের পাতা নিচের দিকে এবং উুরর মূলে লেগে থাকে। দুই হাত টান টান করে একসঙ্গে জোড়া করুন। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে দৃষ্টি স্থির রাখার জন্য আই লেভেল বারবার একটি বিন্দুতে রেখে তাকান। আপনার সমস্ত মনোযোগ শ্বাস প্রশ্বাস ও মাটিতে রাখা ডান পায়ের পাতায় দিন।শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত-পা নামিয়ে ফেলুন তারপর বা পা তুলে ডান পা মাটিতে রেখে আবার এইভাবে করুন। এভাবে দুই থেকে পাঁচ মিনিট করার চেষ্টা করতে হবে। একা একা ঘরে বা খোলা জায়গায় বৃক্ষাসন করুন। মনোযোগ ঠিক রেখে নির্জন পরিবেশে করার চেষ্টা করতে হবে।
- সহজ প্রাণায়ন যোগাসন
ফুসফুস হল আমাদের শ্বাসপ্রক্রিয়ায় বিশেষ ভূমিকা পালনকারী অংশ। প্রাণায়ন যোগাসনের মাধ্যমে ফুসফুসের সম্পূর্ণ অংশকে ব্যবহার করে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। একটি নির্দিষ্ট আসনে বসে মেরুদন্ড সোজা রেখে গভীরভাবে শ্বাস নিতে হবে। যখন বুঝবেন আর শ্বাস নিতে পারছেন না তখন নিঃশ্বাস ছাড়বেন। কিন্তু যে সময় নিয়ে শ্বাস নিবেন তার থেকে বেশি সময় নিয়ে আস্তে আস্তে শ্বাস ছাড়বেন।এই যোগাসনের মাধ্যমে ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ করে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। সর্দি, হাছি, কাশি ভালো হয়।
- শবাসন যোগাসন
শব বা মড়ার মতো শুয়ে থাকতে হয় বলে কে শবাআসন বলা হয়। প্রথমে পা দুটি লম্বালম্বি ভাবে সোজা অবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। শরীরের দুপাশে দুই পা যেন থাকে। দুনিয়ার সব চিন্তাভাবনা এমন ভাবে শুয়ে থাকতে হবে। শবাসনের মাধ্যমে শরীরের ক্লান্তি, অবসাদ, অনিদ্রা ইত্যাদি দূর করে শরীরে কর্মশক্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
- ধনুরাসন যোগাসন
ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে এই যোগাসনটি করতে হয় বলে একে ধনুরাসন বলা হয়। প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন তারপর পা দুটো হাঁটুর কাছ থেকে ভাঁজ করুন। পায়ের পাতা যত সম্ভব পিঠের উপরে নিয়ে এসে দুই হাত দিয়ে গোড়াই দুপুরে শক্ত করে ধরে রাখুন। দুহাত দিয়ে দু পা মাথার দিকে টেনে আনার চেষ্টা করুন। তলপেট মেঝেতে রেখে বুক হাটু উরু উপরের দিকে টেনে তুলুন।
সামনের দিকে তাকিয়ে ঘাড় পেছনের দিকে হেলে থাকবে এবং শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন। উচ্চ রক্তচাপ এবং গর্ভবতী কোন অপারেশনের রোগী যোগব্যায়ামটি করবেন না। ধনুরাসন যোগাসন লিভারের সমস্যা সমাধানে কাজ করে। পেট ও কোমরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে এবং রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। বুকের বেষ্টনী বাড়াতে ও কুজো ভাব দূর করতে ধনরাসন যোগাসন বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- সূর্য নমস্কার
প্রাচীনকালে শরীরকে যোগ ব্যায়াম অভ্যাসের উপযোগী করে তোলার জন্য মুনি ঋষিরা সূর্য নমস্কার এ আসনটি করতেন । সূর্য নমস্কার এর ভঙ্গি গুলো একটি ছন্দময় গতিতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত করে যেতে হয়। খুবই দ্রুত এর জনতা কেটে যায় এবং কাজের জন্য উপযোগী হয়। শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং শ্বাস প্রশ্বাস সচল হয়।
ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করার সঠিক সময় :
ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করার সঠিক সময় হিসেবে যে সময়কে নির্ধারিত করা হয়েছে সেটি হল সূর্যোদয়ের আধা ঘন্টা পূর্ব মুহূর্ত হতে সূর্যোদয়ের ৪০ মিনিট পর পর্যন্ত। এটি যোগ ব্যায়ামের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। যোগব্যায়াম শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মনকে প্রশান্তি দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যোগব্যায়ামের মাধ্যমে নানারকম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, মাইগ্রেন ইত্যাদি।
সঠিক নিয়ম মেনে এবং সঠিক সময়ে যোগব্যায়াম করলে ফলাফল ভালো পাওয়া যায়। যোগ ব্যায়াম করার সঠিক সময় সকাল ও সন্ধ্যা যে কোন এক সময়ে হতে পারে। কিন্তু ভরা পেটে যোগ ব্যায়াম করা ঠিক না। খাবার খাওয়ার কমপক্ষে ৩-৪ ঘন্টা পরে যোগদান করা যেতে পারে। বৈজ্ঞানিক মতে যোগাসন করার সঠিক সময় হলো সূর্য ওঠার আগে ভোর বেলা।
এ সময় যোগাসন করলে শরীরের পক্ষে সবচেয়ে ভালো হয়। ভোরবেলা শীতল আবহাওয়া এবং নির্জন পরিবেশ থাকায় যোগাসন করলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট যোগব্যায়াম করতে হবে। তবে নিয়মিত ইয়োগা বা যোগব্যায়াম না করলে ফলাফল ভালো পাওয়া যায় না।
ইয়োগা বা যোগ ব্যায়াম করার নিয়ম কানুন :
দশ বছরের শিশু থেকে যেকোনো বয়সের নারী-পুরুষ ইয়োগা করতে পারেন। ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করার জন্য তেমন কিছু প্রয়োজন হয় না লাগে শুধু ইচ্ছা শক্তি, ধৈর্য ও অধ্যবসায়। ইয়োগা করার জন্য কিছু নিয়মকানুন রয়েছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
ইয়োগা বা যোগাসনের নিয়ম বলতে প্রথমে আসে ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক পরে যোগাসন করা।
যোগাসন করার জন্য একটি ম্যাট প্রয়োজন যার উপরে বসে আপনি অনুশীলন করতে পারবেন। যোগাসন সব সময় খালি পায়ে করা উচিত।
খুব ভোরবেলা ইয়োগা করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। দৈনিক এক ঘন্টা করে ইয়োগা করা শরীরের জন্য ভালো।
বদ্ধ কোন ঘরের মধ্যে ইয়োগা না করে প্রাকৃতিক নিরিবিলি জায়গায় যেখানে উন্মুক্ত বাতাস রয়েছে সেখানে ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করা ভালো।
কিন্তু বর্তমান সময়ে কর্মব্যস্ততার জন্য অনেকে অফিস আদালতে জান যার জন্য সকালে সেরকম একটা সময় হয় না। যে কেউ চাইলে বিকালে বা সন্ধ্যায় ইয়োগা করতে পারেন।
ভোরবেলা খালি পেট অবস্থায় যোগব্যায়াম করা যেতে পারে কিন্তু দিনের অন্যান্য ভাগে খালি পেটে যোগব্যায়াম করা ঠিক না। খাবার গ্রহণের দুই থেকে চার ঘণ্টা পরে যোগাসন করা ভালো।
ইয়োগা করার নিয়মের মধ্যে আরেকটি বিষয় সেটি হল অনেকে ইয়োগা বা যোগ ব্যায়াম করার পরে গোসল করেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন গোসল করার পরে ইয়োগা করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
সকালে উঠে সরাসরি যোগ ব্যায়ামে যাওয়া ঠিক না। যোগব্যায়ামে যাওয়ার আগে সকলের উচিত মুখ হাত ধরে ফ্রেশ হয়ে নেওয়া এবং শৌচাগারের কাজ সারা। তারপর হালকা গরম দুই গ্লাস পানি পান করে ইয়োগা বা যোগাসন করলে শরীরের অবসন্ন কেটে যায়।
ইয়োগা বা যোগ ব্যায়ামের সময় খেয়াল রাখতে হবে নিঃশ্বাস প্রশ্বাস যেন স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। যোগাসন করার সময় খেয়াল রাখতে হবে জোরে জোরে বা তাড়াহুড়া না করা। তাতে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে।
অনেকের ধারণা ওজন যাদের বেশি তারা ইয়োগা করতে পারবেন না কিন্তু এ ধারণাটি ভুল। যেকোনো ওজনের মানুষ তাদের সুবিধা মত যোগ ব্যায়াম করতে পারেন।
ইয়োগা বা যোগব্যায়ামের উপকারিতা :
ইয়োগা বা যোগব্যায়ামের অনেক উপকারিতা রয়েছে। ইয়োগা নিয়মিত করলে আমাদের শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব। যোগব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক কিছু উপকার হয় যা আমরা এখন আলোচনা করব।
- নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।
- উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সমাধানে যোগ ব্যায়াম করুন।
- গ্যাস্টিক সমস্যা সমাধানে যোগ ব্যায়াম।
- যোগব্যায়াম ধৈর্যশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগীরা যোগব্যায়ামের মাধ্যমে সুস্থ থাকতে পারেন।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- নিয়মিত ইয়োগা করলে ঘুম ভালো হয়।
- কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ইয়োগা করুন।
- পাচনতন্ত্রের বিকাশে ইয়োগার গুরুত্ব অপরিসীম।
- নিয়মিত যোগ ব্যায়াম হার্ট সুস্থ রাখতে পারে।
- ইয়োগা বা যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
- পিঠে ব্যথা সারাতে ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করুন।
- নিয়মিত ইয়োগা ফুসফুসের জন্য ভালো এবং সর্দি, হাছি, কাশি ভালো হয়।
- ইয়োগা করলে সাইনাস বা অন্যান্য এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- নিয়মিত ইয়োগা দ্রুত বার্ধক্য কমিয়ে যৌবন ধরে রাখতে সহায়তা করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে যোগব্যায়াম ভালো কাজ করে।
- শরীরের শক্তি যোগায় এবং শরীর সতেজ ও নমনীয় করে।
- শরীরকে ভেতর থেকে শক্ত করে এবং মাংসপেশি টানটান করে।
- যোগব্যায়াম করলে মেজাজ ফুরফুরে থাকে এবং মানসিক চাপ কমে।
- নিয়মিত ইয়োগা উত্তেজনা কমিয়ে আত্মসংযম বাড়ায়।
- নিয়মিত ইয়োগার মাধ্যমে যেকোনো কাজে মনোযোগ বাড়ে।
ইয়োগা করলে কি ওজন কমে :
ওজন বাড়ার সমস্যা এখন সচরাচর সকলের দেখার দিচ্ছে । ওজন কমাতে মানুষ কত কিছুই না করে থাকে। ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি, খাবার কম খাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনে হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়াম করার সময় অনেকেরই থাকেনা। তাই ঘরে বসে ইয়োগার মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব। নিয়মিত ইয়োগা বা যোগব্যায়াম এবং যে সকল যোগব্যায়াম করলে ওজন কমে সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
উত্থিত পা ভঙ্গি এ আসনটি আপনার পেট ও নিতম্বের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এ আসনটির মাধ্যমে শরীরের পেশীশক্তি প্রসারিত হয় পেটের পেশি গুলিকে শক্তিশালী করে। ধনুরাসন প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন তারপর হাতের তালু আপনার পায়ের গোড়ালির কাছে রাখুন। হাত দিয়ে আপনার পায়ের গোড়ালি ভালোভাবে শক্ত করে চেপে ধরে শরীর উপরের দিকে তুলুন। আপনার পেট মেঝেতে লেগে থাকবে কিন্তু বুকের উপর অংশ এবং দুই পা উপরের দিকে উঠে থাকবে। এভাবে কয়েক সেকেন্ড থাকার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন।
এভাবে ইয়োগা করলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং হজম শক্তি বাড়ে। মেরুদন্ড, কোমর, বুক ও পায়ের বেশিগুলো কে প্রসারিত করে। ওজন কমানোর জন্য কার্যকরী চতুরঙ্গ দন্ডসানা। এই আসনটির মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব। লম্বা হয়ে পায়ের ও হাতের তালুর ওপর ভর করে শুয়ে পড়ুন। তারপর হাতের ওপর সমস্ত ভর দিয়ে শরীরকে মাটি থেকে উপরে রাখতে হবে। হাতের পাশাপাশি পায়ের উপর ও ভর করতে হবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। হাত, কব্জি, কোনুই ও পিঠের বাড়তি মেদ কমাতে চতুরঙ্গ দন্ড সানা এ আসনটি করুন।
নৌকাসন এই আসনটির মাধ্যমে পেটের মেদ বা ভুড়ি কমানো যায়। প্রথমে মাটিতে পাতা ম্যাটের উপর শুয়ে পড়ুন এবার কোমর থেকে মাথা পর্যন্ত ধীরে ধীরে মাটি থেকে উপরের দিকে তুলুন। দুই হাত সামনের দিকে বাড়িয়ে রাখুন। দুই পা নিতম্বের ওপর ভর দিয়ে সামনের দিকে তুলে ধরুন। এছাড়া আরো অনেক ইয়োগা বা যোগব্যায়াম আছে যেসব নিয়মিত নিয়ম মেনে করলে ওজন কমাতে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
পরিশেষে:
ইয়োগা বা যোগব্যায়াম প্রাচীনতম শরীরচর্চা হলেও বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। ইয়োগা শরীরের নানা ধরনের উপকার সাধন করে। ইয়োগার বিভিন্ন প্রকারভেদ ও এর সঠিক সময় ও নিয়ম মেনে ইয়োগা করলে ফলাফল ভালো পাওয়া যায়। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে ইয়োগা বা যোগব্যায়াম সম্পর্কে নানা তথ্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরা চেষ্টা করেছি। আর্টিকেটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে আমাদের পাশে থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url