কিভাবে অনলাইন থেকে স্মাট কার্ড ডাউনলোড করবেন জেনে নিন ।
কিভাবে অনলাইন থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করবেন বা স্মার্ট কার্ড চেক করবেন তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন। স্মার্ট কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।যারা এখনো স্মার্ট কার্ড হাতে পাননি এবং স্মার্ট কার্ড হাতে পেয়েও হারিয়ে ফেলেছেন তাদের জন্য আর দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। কেননা স্মার্ট কার্ড অনলাইনে ডাউনলোড করা যায় এবং এই স্মার্ট কার্ড দিয়ে আপনি আপনার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালন করতে পারবেন।
আবেদন করার পর অনেকদিন হয়ে গেছে তারপরও পাচ্ছেন না আপনার স্মার্ট কার্ড তাদের জন্য আজকে এই আর্টিকেল। আজ এ আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানাবো কিভাবে অনলাইন থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করবেন এবং স্মার্ট কার্ড চেক করবেন।
স্মার্ট কার্ড কি:
স্মার্ট কার্ড কি? এবং এই স্মার্ট কার্ড দিয়ে কি কি কাজ হয় এসব প্রশ্নের উত্তর বোধ হয় আমরা অনেকেই খুব সহজ ভাবে জানি। স্মার্ট কার্ড হচ্ছে ভোটার আইডি কার্ড যার ডিজিটাল ভাবে সংরক্ষণ করা হয়। স্মার্ট কার্ডে একজন নাগরিকের সমস্ত তথ্য ডিজিটাল উপায়ে সংরক্ষিত থাকে। একটি স্মার্ট কার্ডের অন্যতম কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলো এতে সিমের মত মাইক্রোচিপ থাকে। যাতে একজন নাগরিকের ছবি, নাম, পরিচয় এবং বায়োমেট্রিক তথ্য সহ ৩২ ধরনের সিটিজেন ডাটা সংরক্ষণ করে রাখে।
কিভাবে অনলাইন থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করবেন:
স্মার্ট কার্ড তৈরি হলে তা সংশ্লিষ্ট উপজেলায় প্রেরণ করা হয়। আপনি উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। গ্রাম ও এলাকাভিত্তিক ক্যাম্পেইন করে গ্রাহকদের কাছে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হয়। যদি আপনার স্মার্ট কার্ড আপনার হাতে না আসে তাহলে আপনি অনলাইন থেকে আপনার স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। এবং তা দিয়ে আপনি কাজ করতে পারবেন। কিন্তু ডাউনলোড কপি থেকে মাইকোস্ক্রিপের ব্যবহার করতে পারবেন না। কিভাবে অনলাইন থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করবেন আসুন বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।
অনলাইন থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করবেন কিভাবে, প্রথমত https://www.nidw.gov.bd এই লিংকে ক্লিক করে এদের এই ওয়েবসাইটে ঢুকে পড়ুন। এই ওয়েবসাইটে বাম পাশের উপর দিকে স্মার্ট কার্ড স্ট্যাটাস লেখা আছে ওখানে ক্লিক করুন। তাহলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন স্মার্ট কার্ড স্ট্যাটাস এ ইন্টারফেস শো করবে। এখন কিছু ফাঁকা ঘর থাকবে সেগুলোতে আবেদনের সময় আপনাকে যে ফরম দেওয়া হয়েছিল সেখানে যে নাম্বার ছিল দেওয়া সেই নম্বরগুলো বসান।
এরপর জন্ম তারিখ, মাস এবং বছর এসব কিছু সঠিকভাবে দিয়ে ক্যাপচা কোড পূরণ করতে হবে। এসব কাজ হয়ে গেলে সাবমিট করতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সকল তথ্য যেন সঠিকভাবে পূরণ করা হয়।বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করুন এবং মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করুন। অন্য একটি মোবাইলে NID Wallet অ্যাপ ইন্সটল করে ফেইস ভেরিফিকেশন করুন। লগইন করার পর ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করুন।
অরিজিনাল স্মার্ট কার্ড দিয়ে আপনি খুব সহজেই সকল কাজ করতে পারবেন কিন্তু ডাউনলোড করা স্মার্ট কার্ড দিয়ে বিভিন্ন বড় বড় কাজ করা সম্ভব নয়। যেমন ব্যাংক একাউন্ট খোলা, পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করা এসব কাজ আপনি ডাউনলোড কপি দিয়ে করতে পারবেন না। তাই যত দ্রুত সম্ভব অরিজিনাল স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করুন।
স্মার্ট কার্ড কেন এত প্রয়োজনীয় এবং কি কি কাজ হয়:
জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্ট কার্ডে মূলত ২২ ধরনের সেবা পাওয়া যায়। স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং নবায়ন করার কাজে লাগে, পাসপোর্ট করা এবং নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, চাকরি আবেদন, বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন, সম্পত্তির বা জমি ক্রয় বিক্রয়, ব্যাংক একাউন্ট খোলা বীমা স্কিমে অংশগ্রহণ, আয়করদাতা শনাক্তকরণ নাম্বার পাওয়া, শেয়ার আবেদন ও বিও হিসাব খোলার কাজে স্মাট কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন।
ভোটার সনাক্তকরণ, পানি -বিদ্যুৎ- গ্যাস সংযোগ, সরকারি ভাতাউত্তোলন, ব্যাংক ঋণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, আসামী ও অপরাধী সনাক্তকরণ, ই টিকেটিং, সরকারি ভর্তুকি, সাহায্য ও সহায়তা ,বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নাম্বার পাওয়া এসব কাজে স্মার্ট কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র কাজে লাগে। তাহলে বুঝতে পারছেন স্মার্ট কার্ড বা জাতীয় পরিচয় দিয়ে কত ধরনের কাজ করা যায়। স্মার্ট কার্ড এর গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের সকলকে অবগত থাকা উচিত।
স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করতে যা যা প্রয়োজন:
স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করতে যে সকল কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ
- জন্ম সনদ বাংলা ও ইংরেজি
- সকল শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ
- পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র
- নাগরিকত্ব সনদ যাকে চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্র বলা হয়।
- স্বামী /স্ত্রী জাতীয় পরিচয় পত্র /জন্ম সনদ (বিবাহিতদের ক্ষেত্রে)
- হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ
- ইউটিলিটিভ বিল এর কপি
- রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার সনদ
- পূর্বে কখনো ভোটার হননি এই মর্মে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন পত্র বা অঙ্গীকারনামা।
স্মার্ট কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের মেয়াদ কত বছর:
২০০৭ সালে নির্বাচন কমিশন ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকাশের পর সাধারণ জনগণকে প্রিন্টেড লিমিলেটিং জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করেন। সেই জাতীয় পরিচয় পত্রের মেয়াদ দেয়া হয়েছিল ১৫ বছর। তারপরে এক সংবাদে প্রকাশ করা হয়েছিল মেয়াদ উত্তীর্ণ এন আই ডি কার্ডের রিনিউ করতে ফি দিতে হবে। কিন্তু পরে এ তথ্যের কোন ভিত্তি পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস পরিমাপের মেশিনের নাম এবং দাম।
সর্বশেষ ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী এক কোটি দশ লক্ষ মানুষকে জাতীয় পরিচয় পত্র দেওয়া হয়েছে। এইসব জাতীয় পরিচয় পত্রের মেয়াদ দেওয়া হয়েছিল ২ বছর। দুই বছর মেয়াদ দেওয়ার কারণ হচ্ছে দুই বছর পরে সবাইকে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। কিন্তু এ পর্যন্ত অনেকেই স্মার্ট কার্ড হাতে পাননি। এই দুই বছর মেয়াদি পরিচয় পত্র সমাধান নির্বাচন কমিশন (ইসি) করেছেন।
নির্বাচন কমিশন এই সকল জাতীয় পরিচয় পত্রের মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়িয়ে দিয়েছেন। ২০২০ সালের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে জাতীয় পরিচয় পত্রের মেয়াদ আজীবন অর্থাৎ ১৫ বছর বা দুই বছর মেয়াদী জাতীয় পরিচয় পত্র যে সকল নাগরিকদের ছিল তারা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে আজীবন মেয়াদি জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ পরে যারা জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্ট কার্ড নিবন্ধন করেছেন তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র মেয়াদ হবে আজীবন।
শেষ কথা:
আর্টিকেলের মাধ্যমে স্মার্ট কার্ড কি, স্মার্ট কার্ডের কাজ, স্মার্ট কার্ড কত ধরনের সেবা প্রদান করে, কিভাবে অনলাইন থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করবেন, স্মার্ট কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র মেয়াদ কত বছর ইত্যাদি সকল বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করলাম। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং পড়ার সুযোগ করে দিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url