মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ১৫টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

মুখের দুর্গন্ধ একটি মারাত্মক সমস্যা। আমাদের অনেকেরই মুখের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। মুখের দুর্গন্ধের কারণে মন খুলে কথা বলা, হাসাহাসি কিছুই করা যায় না। কারণ আপনার পাশের মানুষ আপনার মুখের দুর্গন্ধ হতে বিরক্ত বোধ করতে পারে। এ সমস্যায় হয়তো আপনিও ভুগছেন। মুখের দুর্গন্ধের বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় সমূহ

যেমন বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবে মুখের দুর্গন্ধ গন্ধ হতে পারে। আবার মুখ,দাঁত ও জিহ্বায় জমে থাকা জীবাণুর জন্য মুখের গন্ধ হতে পারে। অথবা মুখের ভেতরে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধলে মুখের গন্ধ হতে পারে। শরীরে পানির ঘাটতি হলেও মুখে দুর্গন্ধ হয় এবং কিছু খাদ্যাভ্যাস এর কারণেও মুখের গন্ধ হতে পারে। যাই হোক না কেন স্বাভাবিকভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবেই মুখের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে।

তাই আমাদের মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ১৫ টি উপায় সম্পর্কে আমরা এই আর্টিকেলে জানাবো।এমন কিছু সহজ উপায় আছে যা আপনি ঘরে বসে নিজেই খুব সহজে করতে পারবেন। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে মুখের দুর্গন্ধের কারণ এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ১৫ টি উপায় নিয়ে আলোচনা করব।

যেসব কারণে মুখের গন্ধ হয়:

সাধারণত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে মুখের গন্ধ হয়ে থাকে। দাঁত, জিহ্বা, দাঁতের মাড়ি ইত্যাদি জায়গায় সংক্রমণ থাকলেও মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। প্রত্যেকবার খাবার গ্রহণের পর মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া জিহ্বা অপরিষ্কার থাকলে বা জিহ্বাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মালে মুখের দুর্গন্ধ হয়। কম পানি পান করাও মুখে দুর্গন্ধের অন্যতম কারণ। এছাড়াও মুখ অতিরিক্ত শুষ্ক থাকলে মুখে লালা কম থাকলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। কিছু খাদ্যাভ্যাস যেগুলো মুখের দুর্গন্ধের অন্যতম কারণ।

যেমন, অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার, মিষ্টি, দুধ জাতীয় খাবার, কোমল পানীয়, চকলেট,মাখন, ঘি, অ্যালকোহল ইত্যাদি। এছাড়াও তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার যেমন রসুন, পেঁয়াজ ও গন্ধ যুক্ত মসলা ইত্যাদি খেলেও মুখের গন্ধ হতে পারে। কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে যার জন্য মুখের গন্ধ হতে পারে। অতিরিক্ত এসিডিটি, লিভার ও পাকস্থলী সমস্যা, রাতে ঘুম না হওয়া, ধূমপান তামাক দব্য সেবন, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি ও মুখের দূর্গন্ধের অন্যতম কারন। এছাড়াও যেসব রোগীরা ডায়াবেটিস এবং মানসিক সমস্যা, কান,নাক, গলার সমস্যা রয়েছে তাদের মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। আবার পেট যদি ঠিক মত পরিস্কার না রাখেন,তার মানে পায়খানা ঠিক মত না হওয়া মুখে গন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ। 

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ১৫টি উপায়:

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আমরা অনেকে অনেক কিছু করে থাকি। ডক্টরের কাছে যাই, বিভিন্ন মাউথওয়াশ ব্যবহার করি, বিভিন্ন টুথপেস্ট ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা ঘরে থাকা কিছু উপাদান যেসব দিয়ে আমরা মুখে দুর্গন্ধ দূর করতে পারি। তার জন্য দরকার সঠিক নিয়ম,সময় এবং নিজের মুখ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখার চেষ্টা।নিচে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ১৫ টি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
  • দিনে দুইবার নিয়মিত ব্রাশ করা
আমরা সকলেই জানি দিনে দুইবার ব্রাশ করা জরুরী। একবার রাতে খাবার পর এবং একবার সকালে নাস্তার পর। কারণ খাবার খাওয়ার পর খাদ্য কনা দাঁতের ফাঁকে জমে জীবাণু সৃষ্টি করে যা আমাদের মুখের দুর্গন্ধ তৈরি করে। নিয়মিত দিনে দুইবার ব্রাশ করার ফলে দাঁতের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  •  উষ্ণ লবণ পানি দিয়ে কুরকুচি
মুখ এবং দাঁতের যত্নে উষ্ণ গরম লবণ পানির কোন বিকল্প নেই। বহু বছর আগে থেকেই উষ্ণ গরম লবণ পানির ব্যবহার হয়ে আসছে। গলা ব্যথা, দাঁতের সমস্যা, মুখের ঘা থেকে শুরু করে মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে উষ্ণ গরম পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে কুরকুচি করুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।
মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ১৫ টি উপায়
  • জিহ্বা পরিষ্কার রাখা
শুধু দাঁত ব্রাশ করলেই হবে না যেও বা পরিষ্কার রাখতে হবে। দাঁত পরিষ্কার করলে মুখে গন্ধ চলে যাবে এমনটা নয় আমাদের জিহ্বাতে ও ব্যাকটেরিয়া থাকে। প্রতিবার বাস করার সময় জিহবা ও পরিষ্কার করে নেয়া উচিত। তাহলে মুখের দুর্গন্ধ অনেকটা কমে যায়।
  • প্রচুর পানি পান করা
মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ হলো রস শুকিয়ে যাওয়া। আমাদের মুখে যখন লালা শুকিয়ে যায় তখন মুখের দুর্গন্ধ হয়। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস করুন। পানি আমাদের মুখের ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। সারাদিনে কম পানি পান করলে মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে।
  • লবঙ্গ
আমরা অনেকেই লবঙ্গের উপকারিতা সম্পর্কে অবগত আছি। লবঙ্গ আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন করে। তার মধ্যে অন্যতম হলো দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা যেমন দাঁতের রক্তপাত, মাড়ি ফুলে যাওয়া, দাঁত ক্ষয় হয়ে যাওয়া সমস্যা থেকে সমাধান করে। লবঙ্গের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল মুখের ভেতরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এবং দাঁতের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে প্রতিদিন দুই তিনটে লবঙ্গ ধীরে ধীরে চাবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • লেবুর রস
আমরা অনেকেই জানি লেবুর রস জীবাণু ধ্বংস করতে সহায়তা করে। এক গ্লাস পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন এতে মুখের দুর্গন্ধ কমে যাবে। লেবুর রস শুধু মুখের ভেতরের জীবাণু ধ্বংস করে না শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বাড়ায়। তাই নিয়মিত লেবুর রস খাওয়ার অভ্যাস করুন খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • নিমের দাঁতন ব্যবহার করা
নিমের ডালে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ যা জীবাণুনাশক ক্ষমতা রাখে। নিম গাছের ছাল, ডাল এবং পাতা সবগুলোরই উপকারিতা রয়েছে। নিম পাতার রস খেলে যেমন নানান অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তেমনি নিমের গাছের ডাল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে দাঁত এবং মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। বহুকাল থেকে নিমের ডাল মেসওয়াক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মুখের দুর্গন্ধ দূর করা সহ দাঁতের মাড়ির সমস্যা, দাঁতের রক্তক্ষরণ ইত্যাদি সমস্যা সমাধান দিতে পারে এই নিম ডালের দাঁতন।
  • আপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সিডার ভিনেগার আমাদের মুখের ভিতরের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। ২ টেবিল চামচ ভিনেগার এক কাপ লবণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে মাউথওয়াশ হিসেবে বোতলে ভরে রাখুন। এরপর মুখে নিয়ে কুলকুচি করার অভ্যাস করুন। এভাবে নিয়মিত এই মাউথওয়াশ টি ব্যবহারের ফলে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।
  • বেকিং সোডা
বেকিং সোডায় বিদ্যমান অ্যাসিড মুখের জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। ব্রাশ করার সময় ব্রাসে পেস্ট এর সাথে এক চিমটি বেকিং সোডা নিয়ে ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করুন। এভাবে দিনে একবার ব্রাশ করলে মুখের দুর্গন্ধ চলে যাবে। অথবা এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে দিনে দুইবার কুলকুচি করুন। নিয়মিত এই অভ্যাস আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে।
  • নারিকেল তেল
নারিকেল তেল মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে সহজে মেরে ফেলে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে নারিকেল তেল অত্যন্ত কার্যকরী।খুব কম সময়ে নারিকেল তেল দিয়ে মুখের দুর্গন্ধ দূর করা যায়। এক চামচ নারিকেল তেল মুখের মধ্যে নিয়ে কয়েক মিনিট পুরা মুখে জিহ্বা দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। এরপরে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন নিমিষেই দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।
  • মধু ও দারুচিনি
মধু ও দারুচিনি উভয়েরই রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। আমাদের মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে মধু ও দারুচিনির পেস্ট মুখে লাগাতে পারেন। এতে মুখের দুর্গন্ধ যেমন দূর হয়ে যায় তেমনি দাঁত ও মাড়ির উপকার হয়।
কিভাবে মুখের দূর্গন্ধ দূর করা যায়
  • ধূমপান ও তামাক দ্রব্য পরিহার
বিশেষ করে যারা ধূমপান করেন তাদের মুখের দুর্গন্ধবেশি হয়। এর কারণ হচ্ছে ধূমপানের কারণে মুখের ভেতরের লালা শুকিয়ে যায়। যা মুখে দুর্গন্ধের অন্যতম কারণ। আমাদের মুখের লালা, আমাদের মুখের ভেতরের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবন ও ধ্বংস করে। কিন্তু ধূমপানের ফলে যখন মুখে লালা শুকিয়ে যায় তখন দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবাণু বাড়তে থাকে যার ফলে মুখের দুর্গন্ধ হয়। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে ধূমপান ও তামাক দব্য পরিহার করুন।
  • মৌরি
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে মৌরি অত্যন্ত কার্যকর। খাবারের পর এক চামচ মৌরি মুখে দিয়েচি বলে মুখের দুর্গন্ধ এবং জীবাণু নষ্ট হয়ে যায়। মরি হজম শক্তি বাড়ায়। পেটের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে মৌরির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। নিয়মিত মৌরি চিবিয়ে খেলে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।
  • আদা
আদা এ প্রাকৃতিক উপাদানটির রয়েছে হাজারো গুণ। এক চা চামচ আদার রস এক কাপ হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে কুলকুচি করুন। যাদের মুখে অতিরিক্ত গন্ধ তারা আদার রস দিয়ে এই পানি কুরকুচি করুন নিয়মিত খাওয়ার পরে। লবঙ্গ ও আদার রস মিশিয়েচা বানিয়ে নিয়মিত পান করলে এটি আরো ভালো ফলাফল দেয়।
  • গ্রীন টি
গ্রিন টি এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে মুখের দুর্গন্ধ দূর করা এবং ওজন কমানো অন্যতম। সকালের আমরা সকলেই কমবেশি চা পান করে থাকি। অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। সকালে এক কাপ গরম পানিতে একটি গ্রিন টি প্যাক এবং তার সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে শরীরের নানা উপকার হয়। তার সাথে মুখের ভেতরের জীবাণু ধ্বংস হয় এবং মুখের দুর্গন্ধ জাদুকরী ভাবে দূর হয়ে যায়।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে যেসব ফল ও শাকসবজি

যে সকল ফলে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি উপাদান বিদ্যমান সে সকল ফলমূল মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারে। প্রথমে যে ফলের নাম আছে তা হল আপেল। অতিরিক্ত ফাইবার সম্পূর্ণ এই ফলটি খেলে দাঁতের ভেতর থেকে খাদ্য কণা বের হয়ে আসে। আপেল খেলে ব্রাশ করার মত কাজ করে। গাজর ও আপেলের মতো মচমচে ফল যে ফলগুলো চিবিয়ে খেলে মুখে লালা বা রসের সৃষ্টি হয়। আর মুখের লালা বা রস মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করে এবং লালাতে থাকা খনিজ দাঁতের এনামেল রক্ষা করে।
মুখের দূর্গন্ধ দূর করার ফলমূল ও শাকসবজি

গাজর খাওয়ার ফলে আমাদের মুখের দুর্গন্ধ দূর করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা পেয়ারা খাওয়ার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কারন পেয়ারাতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং অধিক পরিমাণে ফাইবার। যা আমাদের মুখের ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। মুখের গন্ধ দূর করতে আনারসের ভূমিকা অন্যতম। আনারস মুখের অ্যামাইনো এসিড দূর করতে সহায়তা করে।

আনারসে রয়েছে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম। এছাড়াও কমলালেবু, লেবু, জাম্বুরার মত ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। ধনিয়া ও পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেলে মুখের দুর্গন্ধ সাময়িকভাবে দূর করা যায়।এছাড়া খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি রাখুন । শাকসবজি আপনার হজম শক্তি ভালো রাখে এবং পাকস্থলী জনিত সমস্যার সমাধান করে। যা আপনার মুখের দুর্গন্ধ রোধ করতে পারে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে মাউথ ওয়াশ

মাউথ ওয়াশ হলো ফ্লোরাইডযুক্ত এক ধরনের তরল জীবাণুনাশক। রাসায়নিক উপাদান সমৃদ্ধ এই মাউথ ওয়াশ আমাদের মুখের ত্বক, দাঁত, মাড়ি, জিহ্বা, কন্ঠনালীর জন্য বেশ উপকারী। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে ও কার্যকার্য ভূমিকা রাখে এই মাউথওয়াশ। তবে মাউথ ওয়াশ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন,
  • কসমেটিক মাউথ ওয়াশ যার কাজ হচ্ছে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে সুগন্ধ আনা।
  • ক্লোরাইডযুক্ত মাউথ ওয়াশ যার কাজ হল দাঁত গঠনের সাহায্য করা
  • রোগ প্রতিরোধে মাউথ ওয়াশ যা মুখের ঘা নিরাময়ের সহায়তা করে।
  • অ্যালকোহল ফ্রি ন্যাচারাল মাউথ ওয়াশ মুখের শুষ্কতা দূর করে মুখে সুগন্ধ এনে দেয়।
  • প্রেসক্রিপশন মাউথ ওয়াশ যা দাঁতের ব্যথা বা মাড়ির প্রদাহ দূর করে।

মাউথ ওয়াশ ব্যবহারের উপকারিতা

  • মুখের দুর্গন্ধ দূর করে সুগন্ধ ফিরিয়ে আনে
  • দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে
  • মুখের ভেতর থেকে খাদ্য কণা দূর করে
  • দাঁত উজ্জ্বল করে
  • মাড়ির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে
  • মুখের শুষ্কতা কমিয়ে মুখে লালা তৈরি করে।

মাউথ ওয়াশ ব্যবহারের নিয়ম

দাঁত ব্রাশ করার পর মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে হয়। একটি কাপে চার চা চামচ মাউথ ওয়াশ নিয়ে মুখে নিয়ে ৩০ সেকেন্ড ধরে গারগিল করতে হয়। খেয়াল রাখতে হবে মাউথ ওয়াশ যেন পেটের ভেতরে চলে না যায়। গারগিল শেষ হলে মাউথ ওয়াশ মুখ থেকে ফেলে দিবেন। মাউথওয়াশে অ্যালকোহল ও ফ্লোরাইড থাকার কারণে ছয় বছরের নিচে বাচ্চাদের মাউথওয়াশ ব্যবহার করা ঠিক না। সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

শেষ কথা

মুখের দুর্গন্ধ একটি বিব্রত কর অবস্থা। অনেকে এই সমস্যায় ভুগছেন। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ১৫ টি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url