জাফরানের বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা। জাফরানের দাম এতো বেশি কেন ?

জাফরান পৃথিবীর সব থেকে দামি মসলা যা খাবারের রং ও স্বাদ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জাফরানকে লাল সোনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। জাফরানের বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। জাফরান বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। জাফরান ফুলের ভেতরে থাকা লাল পরাগ দ্বন্দ্ব গুলো মূলত জাফরান। এই পরাগ দ্বন্দ্ব গুলো শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। সারাবিশ্বে এ মসলার জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশেষ করে খাবারে স্বাদ , গন্ধ, রং বাড়াতে এটি ব্যবহৃত হয়।
জাফরানের উপকারিতা

এছাড়াও এর নানান রকম ব্যবহার রয়েছে।অনেকেই জিজ্ঞেস করেন জাফরানের দাম এতো বেশি কেন? এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জাফরানের বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা,জাফরানের দাম বেশি হওয়ার কারণ, জাফরানের বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব।

জাফরান কি:

জাফরান একটি আরবি শব্দ। ইংরেজি শব্দ (saffron)। ধারণা করা হয় ফারসি শব্দ সাফরান থেকে উৎপত্তি হয়েছে। যা ল্যাটিন শব্দ (safranum) থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ( crocus sativus)। জাফরান বা ক্রোকাস সাটিভাস একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ যা শরৎকালে জন্মায়। জাফরান গাছের ফুল থেকে এই মসলা সংগ্রহ করা হয়। জাফরান ফুলের লাল রং শৈলির গর্ভমুন্ডু যা জাফরান আশ শুকানোর পর জাফরান মসলা তৈরি হয়।

যদিও ধারণা করা হয় জাফরান ইরান থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। কিন্তু এর উৎপত্তিস্থল নিয়ে কিছু দ্বিমত রয়েছে। জাফরানে রয়েছে কেরোটিনয়েড রঙ্গক এবং ক্রসিন যা খাবার ও কাপড়ে সোনালী হলুদ রং এনে দেয়। জাফরানের বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। পৃথিবীতে যত জাফরান উৎপাদন হয় তার ৯০ ভাগ উৎপাদিত হয় ইরানে।

জাফরানের বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা:

বহুকাল থেকে জাফরান ভেষজ মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জাফরানের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। জাফরানে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন,খনিজ ও মিনারেল বিদ্যমান যার জন্য এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। জাফরানের  বিশেষ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো
  • হার্ট সুস্থ রাখে
আমরা জানি জাফরানের  অনেক উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে জাফরান হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। জাফরান আমাদের শরীর থেকে খারাপ কোলেস্ট্রেরল দূর করে। জাফরানে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের বিভিন্ন সমস্যায় প্রতিরক্ষামূলক উপাদান হিসেবে কাজ করে।
  • অনিদ্রা সমস্যা সমাধান
বর্তমান সময়ে অনেকেরই অনিদ্রা একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনিতা সমস্যার সমাধানে জাফরানের কোন জুড়ি নেই। রাতে ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে দুধের সাথে সামান্য পরিমাণ জাফরন মিশিয়ে নিয়ে পান করলে মানসিক চাপ দূর হয় এবং অনিদ্রা সমস্যা দূর হয়ে যায়।
  • স্মতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
যাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল এবং অল্পতেই সবকিছু ভুলে যান তাদের জন্য জাফরান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। জাফরান আসলে স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ঔষধে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জাফরান মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • মহিলাদের মাসিক জনিত সমস্যার সমাধান
জাফরান মাসিক প্রবাহকে প্রশমিত করে মহিলাদের মাসিকের অস্বস্তিকর ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। মাসিক চলাকালীন এবং পূর্ববর্তী যে মানসিক ও শারীরিক অসুবিধা হয় তা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখে জাফরান। হরমোন জনিত কারণে অনিয়মিত ঋতুস্রাব সমস্যার সমাধানে জাফরান খুব ভালো কাজ করে।
  • রক্তস্বল্পতা সমাধানে
জাফরানে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা রক্তস্বল্পতা সমাধানে কাজ করে। খাদ্য তালিকায় নিয়মিত জাফরান থাকলে শরীরে আয়রন, লৌহ,হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সঠিক থাকে এবং শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
জাফরানের বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
জাফরান কোলন ক্যান্সার সহ ফুসফুস,স্তন, জরায়ু ইত্যাদি ক্যান্সারে প্রতিকারে কাজ করে। জাফরানে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।জাফরানের বিভিন্ন যৌগ বিদ্যমান যা ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে সহায্য করে। জাফরানের বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা এর মধ্যে ক্যান্সার প্রতিরোধ অন্যতম।
  • হাঁপানি সমস্যার সমাধান
জাফরানের নিয়মিত ব্যবহারে হাঁপানি সমস্যা বা অ্যাজমার সমস্যা সমাধান হয়ে থাকে। শ্বাসকষ্ট, কাশি উপশমে জাফরান খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • এসিডিটি সমস্যা সমাধান
নিয়মিত এক গ্লাস পানিতে কয়েকটি জাফরান দিয়ে পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান হয়। নিয়মিত জাফরান খেলে হজমের সমস্যা সমাধান হয় পেট পরিষ্কার থাকে এবং এসিডিটি কমে যায়।
  • দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় ও চোখের ছানি রোধ করে
দুর্বল দৃষ্টি শক্তি কে প্রখর করতে এবং চোখের ছানি সমস্যা সমাধানে জাফরানের কোন জুড়ি নেই। নিয়মিত জাফরান খেলে চোখের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয়।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
উচ্চ রক্তচাপ এখনকার সময়ে একটি বড় সমস্যা। অনেক লোক এ সমস্যায় ভুগছেন। জানলে অবাক হবেন জাফরান উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।নিয়মিত জাফরানের ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

জাফরানের দাম এতো বেশি কেন:

আমরা সবাই জানি পৃথিবীর সবথেকে দামি মসলা হলো জাফরান। গুনে ও মানে সেরা হওয়ায় এ মসলার চাহিদা ও ব্যাপক। জাফরানের আরেকটি নাম হচ্ছে কেশর। বাণিজ্যিক অঙ্গনে জাফরানকে লাল সোনা বলা হয়।বিশ্বের মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি দেশে জাফরানের চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু সকলেরই একটি সাধারণ জিজ্ঞাসা থাকে যে,জাফরানের দাম এতো বেশি কেন? জাফরান এত দামী হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে চাষ এবং সংগ্রহ পদ্ধতি।

জাফরান সংগ্রহ করার জন্য প্রচুর পরিশ্রম দিতে হয় এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। ক্রোকাস সেটিভাস নামে একটি ফুলের আঁশ হল জাফরান। জাফরান ফুলের গর্ভ মুন্ডু ফুল থেকে আলাদা করে শুকিয়ে নিতে হয়। দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে জাফরান চাষ থেকে সংগ্রহ করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি অনেক সময় সাপেক্ষ। হাতের মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হয়। একটি ফুল থেকে মাত্র তিনটি গর্ভ মুন্ডু পাওয়া যায়। এক গ্রাম জাফরান সংগ্রহ করার জন্য ১৫০ টি ফুলের দরকার হয়।
জাফরানের দাম বেশি হওয়ার কারণ

এক কেজি জাফরান সংগ্রহ করতে ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার ফুলের প্রয়োজন হয়। আর এই ফুল সংগ্রহ করার জন্য ৪০ ঘন্টা সময় ব্যয় করতে হয়। বছরে একবারই এই ফুলের চাষ করা হয়। জাফরান সংগ্রহ করতে হয় ভোরবেলা কারণ সূর্যের তাপে ফুল নষ্ট হয়ে যায়। তাই ফুল আসা মাত্রই শ্রমিকরা ফুল থেকে গর্ব মুন্ডু সংগ্রহের কাজ শুরু করে দেন। জাফরান চাষ করা শুধু কঠিন তাই নয় এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে জমি, রোদ, গরম ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা।

ফুল থেকে গর্ভমুন্ড সংগ্রহ করার ব্যাপারটি ও খুব কষ্টসাধ্য। মাটি থেকে ছয় ইঞ্চি উচ্চতায় এই ফুলগুলো হয় যার জন্য শ্রমিকদের দীর্ঘ সময় কুঁজো হয়ে ফুল তুলতে হয়। যা সকল শ্রমিকের জন্য কষ্টসাধ্য। তাই তাদেরকে উচ্চমানের পারিশ্রমিক দিতে হয়। এবার বুঝতে পেরেছেন জাফরানের দাম এতো বেশি কেন? বাংলাদেশী টাকায় প্রতি কেজি জাফরানের দাম প্রায় চার লাখ টাকা। তাহলে বুঝতে পারছেন কতটা দামি এই জাফরান।

জাফরান চাষে কোন দেশ সব থেকে এগিয়ে:

বিশ্বে জাফরান উৎপাদনকারী দেশের সংখ্যা খুব কম।ইরান ও ভারত জাফরান চাষে অন্যান্য দেশের চেয়ে এগিয়ে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ জাফরান যোগান দেয় ইরান। ইরানে অল্প বেতনে অধিক সংখ্যক কর্মী পাওয়া যায়। যার জন্য ইরানে জাফরের চাষ বেশি হয়। যদিও ইরান জাফরান চাষের আবহাওয়া উপযোগী একটি স্থান । ইরানে শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশই নারী শ্রমিক। তারা ভোর ৫টা থেকে ৬ টার মধ্যে জাফরান সংগ্রহের কাজ শুরু করেন।

এছাড়াও মরক্কো, স্পেন, নেদারল্যান্ড, আফগানিস্তান, ভারত এবং আমেরিকার কিছু এলাকাতে ও জাফরানের চাষ হয়ে থাকে। ভারতের কাশ্মীরে যথেষ্ট পরিমাণে জাফরান চাষ। বাংলাদেশের যে সকল জাফরান আসে তার বেশির ভাগই ভারতের কাশ্মীর থেকে আসে। ইউরোপো ও এশিয়ার প্রায় ২০টি দেশে জাফরান চাষ হয়ে থাকে। তার মধ্যে ইরান ও ভারত শীর্ষস্থানে রয়েছে। বিশ্বের মাত্র কয়েকটি দেশে এ জাফরানের চাষ হয় বলে এর মূল্য এত বেশি।

আফগানিস্তানেও কয়েক বছর ধরে জাফরান চাষ হয়ে আসছে। ইরান ও ভারতের পরে জাফরান চাষে তিন নাম্বার শীর্ষ স্থানীয় দেশ হিসেবে ধরা হয় আফগানিস্তানকে। আফগানিস্তানের শহর হারাতে প্রচুর পরিমাণে এখন জাফরান চাষ করা হয়। এর আগে আফগানিস্তানে ৩৪ টি প্রদেশে পপি চাষ করা হতো। কিন্তু এখন এই দেশটিতে পপি চাষের পরিবর্তে কৃষকরা এই রেড গোল্ড বা জাফরান চাষে অতি উৎসাহী। জাফরান চাষ এবং রপ্তানিতে ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে এগোচ্ছে আফগানিস্তান।

জাফরানের ব্যবহার:

জাফরানের নানা মুখী ব্যবহার রয়েছে। সঠিক পরিমাণ ও সঠিক নিয়ম মেনে জাফরান ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যায়। বিশেষ করে খাবারের স্বাদ বাড়াতে এবং রং বৃদ্ধি করতে জাফরান ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি একটি বিশেষ ধরনের মসলা যা খাবারে স্বাদ , গন্ধ ও রং দিয়ে খাবারকে লোভনীয় ও আকর্ষণীয় করে তোলে। এছাড়াও ত্বকের যত্নে জাফরান বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন সুগন্ধী ও সাবান তৈরিতে জাপানের ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। এছাড়া দুধের সাথে কয়েকটি জাফরান মিশিয়ে খেলে নানা রকম সুফল পাওয়া যায়। আসুন আমরা জাফরানের বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিই।
  • খাবারে জাফরানের ব্যবহার
আমরা সাধারণত বিরিয়ানি, সাদা পোলাও এবং রোস্টে জাফরান ব্যবহার করে থাকি। জাফরানের নিজস্ব হলুদ কালার রয়েছে। যা খাবারের সাথে মেশালে খাবারে একটি হলুদ আভা তৈরি হয়। যা খাবার কে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। এছাড়া সুগন্ধি চালের সঙ্গে জাফরান মেশালে পোলাও এর গন্ধ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। জাফরান শুধু সুগন্ধই দেয় নাই এটি স্বাস্থ্যসম্মত বটে। তাই বিভিন্ন খাবারে জাফরানের ব্যবহার জনপ্রিয়।
  • ত্বকের যত্নে জাফরানের ব্যবহার
ত্বকের যত্নে প্রাচীনকাল থেকে জাফরানের ব্যবহার হয়ে আসছে।জাফরান পানিতে শরীর ধুয়ে নিলে শরীরের লাবণ্য বেড়ে যায় । নিয়মিত জাফরানের ব্যবহার ত্বক করে নরম ও হাইড্রেটেড। দাগ মুক্ত ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে জাফরান ব্যবহার করুন। কাঁচা দুধের সাথে চার থেকে পাঁচটি জাফরান থ্রেড কিছুক্ষণ রেখে পরিষ্কার ও শুকনো মুখে লাগিয়ে নিন। তারপরে ৫ থেকে ৭ মিনিট রাখার পর ধুয়ে ফেলুন। জাফরান ত্বকের ছোট ছোট ছিদ্র দূর এবং ত্বকে পুষ্টি যোগায়।
  • কেক বা ডেজার্ট এ জাফরানের ব্যবহার
জাফরানের প্রাকৃতিক কিছু মিষ্টি স্বাদ রয়েছে। যা কেক বা অন্যান্য যেকোন ডেজার্ট এর সাথে মিশে তার স্বাদ বাড়ায়। আমরা সাধারণত ভ্যানিলা ব্যবহার করে কেক বানিয়ে থাকি। ভ্যানিলার সাথে জাফরান মিশ্রিত কেক এক জাদুকরী স্বাদ নিয়ে আসে।
  • সুগন্ধী ও সাবানে জাফরানের ব্যবহার
বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি ও সাবান তৈরিতে জাফরানের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। বহু কাল আগে থেকেই প্রসাধানিতে জাফরানের ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে জাফরানের সাবান বেশ জনপ্রিয়। দেশে-বিদেশে খুব চড়া মূল্যে জাফরান সাবান বিক্রি হয়। জাফরান সাবান এবং সুগন্ধি ব্যবহারের ফলে ত্বক ভালো থাকে।
জাফরানের বিভিন্ন ব্যবহার
  • চুলের যত্নে জাফরানের ব্যবহার
চুল পড়া সমস্যা থেকে শুরু করে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও ঝলমলে স্বাস্থ্যজ্জল চুল পেতে জাফরানের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। চুলের বিভিন্ন সমস্যায় কয়েকটি জাফরান অলিভ অয়েল এর সঙ্গে মিশিয়ে রাখুন। তারপর এই তেল চুলে লাগিয়ে ভালোভাবে মেসেজ করুন। এভাবে নিয়মিত কিছুদিন ব্যবহারের ফলে চুল লম্বা হবে এবং চুল পড়া প্রতিরোধ হবে। জাফরানের তেল চুল এবং শরীর উভয়ের জন্য বেশ উপকারী।
  • দুধের সাথে জাফরানের ব্যবহার
দুধ ক্যালসিয়ামের একটি খুব ভালো উৎস। আমার সকলে জানে দুধ খেলে শরীরের নানান উপকার হয়ে থাকে। কিন্তু এটা জানলে অবাক হবেন যে দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে পান করলে শরীরের নানান উপকার মিলবে। প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস দুধে ৫থেকে ৬ টি জাফরান ভিজিয়ে রাখুন এরপর পান করুন। এভাবে দুধের সাথে জাফরান মিশিয়ে পান করলে ঘুম ভালো হয়, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়, দৃষ্টিশক্তি প্রখর হয়, হার্ট ভালো থাকে এবং যৌন সমস্যা সমাধান হয়।

আসল জাফরান চেনার উপায়:

জাফরান ফুলের লাল বা খয়েরি রংয়ের গর্ভদ্বন্দ্ব হল আসল জাফরান । আমাদের দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নকল জাফরান আসল বলে বিক্রি করে থাকেন। আসল জাফরান চিনার একমাত্র উপায় হল জাফরান পানিতে ভিজিয়ে রাখলে তা ধীরে ধীরে হলুদা লাল বর্ণ ধারণ করে। অপরদিকে নকল জাফরান অর্থাৎ কুসুম ফুল যা সেম জাফরান এর মতো দেখতে পানিতে ভিজিয়ে রাখলে পানি দ্রুত লাল রঙ ধারণ করবে।

আর হাতের তালুতে ঘষলে তা গলে যাবে। কিন্তু আসল জাফরান হাতে তালুতে ঘষলে গলে যায় না। আসল জাফরান চেনার এটি খুব ভালো উপায়। জাফার অত্যন্ত দামী হওয়ায় আসলে জাফরানের সঙ্গে জাফরান মিশিয়ে বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। আমাদের সকলেরই আসল জাফরান চিনে নেওয়ার পদ্ধতি জানা উচিত।

লেখকের মন্তব্য:

এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জাফরান কি এবং জাফরানের বিশেষ স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং জাফরানের দাম এতো বেশি কেন এসব বিষয় সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। জাফরান এর ব্যবহার কিভাবে করতে হয় এবং আসল জাফরান কিভাবে চিনবেন সকল বিষয়ে ও আলোচনা করার চেষ্টা করেছি । আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং জাফরান সম্পর্কে আপনি কোন তথ্য জানতে পেরে থাকেন তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে পড়ার সুযোগ করে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url