নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন
সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আশা করি, আপনারা পরিবার পরিজনদের নিয়ে
সবাই ভালো আছেন। বিগত দিনগুলোর মত আমরা আজকেও একটি জরুরি টপিক নিয়ে আপনাদের
সামনে হাজির হয়েছি। সেটি হচ্ছে নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন সেই
সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য আলোচনা করবো। আপনি কি এই সম্পর্কে জানার জন্য
গুগলে সার্চ করে আমাদের এই ব্লগ পোষ্টিতে এসেছেন? তাহলে এখন আপনি সঠিক জায়গাতেই
এসেছেন।
আপনি যদি আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে থাকেন, তাহলে নবজাতকের গায়ের
রং পরিবর্তন হয় কেন? এই সম্পর্কে জেনে নেওয়ার পাশাপাশি বাচ্চাদের মুখে মাখা
ক্রিম, কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়, নবজাতকের ঠোঁট কালো হওয়ার কারণ
কি, শীতে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো ইত্যাদি সহ এই সম্পর্কে আরো বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন। তাই অবহেলা না করে সম্পূর্ণ
পোস্টটি শেষ অবদি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।
ভূমিকা
আপনি হয়তো এই বিষয়ে অবগত আছেন যে নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয়
কিন্তু গায়ের রং কেন পরিবর্তন হয়? সেই সম্পর্কে হয়তো আপনি
অবগত নন। মূলত আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই আজকের এই পোষ্টটি সাজানো হয়েছে।
আমরা এই বিষয়ে এমন কিছু জরুরি তথ্য প্রদান করব যার মাধ্যমে
আপনারা উপকৃত হতে পারবেন বলে সর্বোচ্চ আশাবাদী।
তাই আমাদের প্রত্যেকেরই এ বিষয়ে জেনে রাখাটা অত্যন্ত জরুরী। কেননা আপনার
শিশুর গায়ের রং কেন পরিবর্তন হয় সেই সম্পর্কে খুঁটিনাটি
বিষয়গুলো জানা থাকলে এটি পরবর্তীতে আপনি
অন্য আরেকজনকেও অবগত করতে পারবেন। তাহলে আসুন, আর অতিরিক্ত কথা না বাড়িয়ে
মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন
আপনি যদি নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন এই সম্পর্কে জানতে চান,
তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। একজন শিশু জন্ম নেওয়ার পর মূলত তার
গায়ের রং ৩ রকম ভাবে পরিবর্তন হতে দেখা যায়। যেমন কালো, হলুদ এবং নীল রং
হতে পারে।
একজন শিশু জন্মের সময় তাদের দেহে মেলালিন (Melanin) নামক একটি উপাদান
উৎপাদন কম হয় যার কারণে গায়ের রং হালকা হতে দেখা যায়। এবং নতুন করে
মেলানিন উৎপাদন বেড়ে যায় শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশের মাধ্যমে।
যার ফলে শিশুর গায়ের রং অনেক সময় কালো হয়ে যায়।
এছাড়াও শিশু জন্ম নেওয়ার পরে যদি তার জন্ডিস দেখা দেয় তাহলে তার জন্মের পর
পরই গায়ের রং হালকা হলুদ হতে পারে। তবে বাচ্চা যদি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে
আসে তাহলে তার গায়ের রং পরিবর্তন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।
তবে রং পরিবর্তন হওয়ার প্রক্রিয়াটি মূলত প্রতিটা বাচ্চার ক্ষেত্রে
প্রযোজ্য হয়ে থাকে এর কারণ আপনার বাচ্চার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে
কিছুটা সময় তো লাগবেই। অনেক সময় অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে মাস খানিক সময়ও
লাগতে পারে।
একজন নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হওয়াটা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলা
চলে। এটা নিয়ে আপনার খুব একটা আতঙ্কিত হওয়া কিংবা ভয় পাওয়ার কারণ নেই।
আবার অনেক শিশু কালো হয়ে যায় এটা মুলত বাচ্চাটি জন্মের ২ থেকে ৩ মাস
পর্যন্ত হতে পারে।
পরে আবার ধীরে ধীরে আপনার বাচ্চা স্বাভাবিক রং ফিরে আসে। কিন্তু আপনার
সন্তানের গায়ের রঙ যদি হলুদ লক্ষ্য করেন তাহলে কিন্তু এট চিন্তা বিষয়।
এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার নিকটস্থ একজন অভিজ্ঞ বা ভালো শিশু ডাক্তারের
পরামর্শ নিতে হবে।
আশা করছি নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত
তথ্যসমূহ জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। এবার চলুন নবজাতকের ঠোঁট কালো হওয়ার কারণ
কি তা জেনে নেওয়া যাক।
নবজাতকের ঠোঁট কালো হওয়ার কারণ কি
অনেক সময় বাবা-মায়েরা খেয়াল করেন যে তাদের বাচ্চা জন্মের পরে ঠোঁট কালো হয়ে
যাচ্ছে। আসলে নবজাতকের জন্মের পড় ঠোঁট কালো হওয়াটা খুবই সাধারন লক্ষন। যা
মূলত শিশুর জন্মের পর পরই এটি দেখা দেয়। তবে কেন হয় সেই সম্পর্কে হয়তো
আপনারা অবগত নন। এজন্য আমরা পোষ্টের এই অংশে এই বিষয়ে আলোকপাত করেছি।
একজন নবজাতকের ঠোঁট কালো হওয়ার প্রধান ও অন্যতম কারণ হচ্ছে সায়ানোসিস। এটি
এমন একটি সমস্যা যা মূলত বাচ্চার রক্তে অক্সিজেনের অভাবে দেখা দিলে
নবজাতকের ত্বক ও ঠোঁট কালো হয়ে যেতে পারে। আবার অনেক সময় অনেক নবজাতকের
বেগুনি হতে পারে।
এবং এই সায়ানোসিস স্যামসা তখনই দেখা দেয় যখন একটি নবজাতকের শ্বাস নিতে
অসুবিধা হয় কিংবা ফুসফুস ও হৃদপিণ্ড সমস্যা হয় অর্থাৎ নবজাতকের ঠোঁট ও
ত্বক কালো হওয়ার মতো স্যামসা দেখা দিতে পারে। তবে এছাড়া অনেক নবজাতকের
ঠোঁটে জন্মগত দাগ থাকে এজন্য তাদের ঠোঁট কালো দেখায়।
আবার আপনার শিশুর যদি ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে কিন্তু ঠোঁটের রং বেগুনি বা
কালো হয়ে যেতে পারে। কেননা একজন নবকজাতকের যখন ঠান্ডা লেগে থাকে তখন তাদের
শরীরের কিছু বিশেষ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উষ্ণ রাখতে রক্তের প্রভাব দেখা দেয় যার
ফলে তাদের ঠোঁট কালো অথবা বেগুনি দেখায়।
আশা করছি আপনারা এতক্ষণে নবজাতকের ঠোঁট কালো হওয়ার কারণ কি সেই সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্যসমূহ জানতে পেরেছেন। তবে আপনি যদি অবজাতকের ঠোঁট অস্বাভাবিক
কালো দেখেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। উপরের অংশটুকু যদি আপনি
মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন, তাহলে এই বিষয়ে আপনার আর কোন প্রশ্ন থাকার কথা
না।
বাচ্চাদের ঠোঁট কাপে কেন
বাচ্চাদের ঠোঁট কাপা একটি সাধারণ লক্ষণ । তবে এটি অনেক সময় জটিল রূপ ধারণ
করতে পারে। এর কারণ হচ্ছে ঠান্ডা লাগা বা জন্মগত শারীরিক অসুস্থতা । এছাড়াও
আরও অন্যান্য কারণ হতে পারে। তাই বাচ্চা যদি জন্মের পর পর এ সমস্যা দেখা
দেয় তাহলে তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ শিশু ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কেননা এই সমস্যাটি জন্মগত হতে পারে কিংবা জন্মগত ত্রুটির জন্য হয়ে থাকে।
এবং অনেক সময় অনেক শিশুর অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার জন্য বাচ্চার ঠোঁট কাপতে
পারে। এটা অনেক সময় বংশগত কারনেও হয়ে থাকে। আপনার আত্মীয়দের মাঝে যদি
কারও এই সমস্যাটা থেকে থাকে তাহলে আপনার বাচ্চারও এটি দেখা দিতে পারে। বলা
যায় এটি এক ধরণের জেনেটিক জনিত সমস্যা। আশা করছি বিষয়টি এতক্ষনে বুঝতে
সক্ষম হয়েছেন। এবার আসুন, শীতে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো তা জেনে
নেওয়া যাক।
শীতে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো
শীতকালে বাচ্চাদের জন্য কয়েক ধরনের ক্রিম পাওয়া যায়। তার মধ্যে আমরা কিছু
ভালো ক্রিমের নাম উল্লেখ করেছি। যেগুলো ক্রিম আপনার শিশুদের জন্য অনেক কাজে
লাগবে। এর পাশাপাশি আপনার শিশুকে সুন্দর এবং ত্বক শুষ্ক রাখতে সহায়তা করবে।
নিম্নে আমরা বেশ কয়েকটি ভালো ক্রিমের নাম উল্লেখ করেছি যেমনঃ
- Aveeno
- Cetaphil
- Sebamed Baby
- Sebamed Baby Cream
- Johnson's Baby Cold Cream
- Vanicream, Eucerin
- Cetaphil Baby Daily Lotion
- Babyganics Daily Moisturizer
- Creamohnson's Baby Cold Cream
- Aveeno Baby Daily Moisture Lotion
- Mustela Hydra Bebe Body Lotion
- California Baby Calendula Cream
- Weleda Baby Calendula Face Cream
- Burt's Bees Baby Nourishing Lotion Etc.
উপরে আমরা যে ক্রিমগুলোর নাম উল্লেখ করেছি সেগুলো আপনার বাচ্চার জন্য
একান্তই দরকার হবে। তবে এই ক্রিমগুলোর মধ্যে Johnson's Baby Cold Cream ও
Babyganics Daily Moisturizer এই দুটি ক্রিম বেশি ভালো। এই ক্রিমগুলো
ব্যবহারের ফলে আপনার শিশুর ত্বক ভালো থাকবে। আশা করছি শীতে বাচ্চাদের জন্য
কোন ক্রিম ভালো তা জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, বাচ্চাদের মুখে মাখা ক্রিমের
নামগুলো জেনে নেওয়া যাক।
বাচ্চাদের মুখে মাখা ক্রিমের নাম
আপনি যখন আপনার শিশুর ত্বকের সুরক্ষার কথা চিন্তা ভাবনা করেন তখন আপনি
বাচ্চার ত্বকের জন্য এমন কিছু চান যেগুলো আপনার শিশুর জন্য খুবই উপকারী।
আপনার সন্তানের জন্য অবশ্যই মুখে মাখা ক্রিমের প্রয়োজন হবে। তাই আপনি
চিন্তা ভাবনা করতে পারেন যে বাচ্চাদের মুখে মাখার ক্রিম কোনগুলো ভালো হবে।
যেগুলো নিলে আপনার শিশুর জন্য উপকারী হবে।
আমরা নিম্নে শিশুদের জন্য 4 টি সেরা ফেস ক্রিমের নাম উল্লেখ
করেছি যা আপনার শিশুর ত্বক সুন্দর করতে সহায়তা করবে যেমনঃ
- আভিনো
- এইচ সলমনলি বাচ্চাদের সানস্ক্রিন SPF 50
- ব্ল লিজার্ড অস্ট্রেলিয়ান সানস্ক্রিন, বেবি SPF 30+
- নিউট্রোজেনা পিওর এবং ফ্রি বেবি সানস্ক্রিন SPF 60
কি খেলে গর্ভের বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়
বাচ্চার দেহে ক্যালসিয়াম এর অভাব দূর করার পাশাপাশি গর্ভের বাচ্চার গায়ের রং স্বাভাবিক ভাবে ফর্সা করতে গরুর দুধ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভকালীন সময়ে দুধ খাওয়া খুবই জরুরি।
তবে এছাড়াও মুরগির ডিমের সাদা অংশ যা গর্ভে থাকা শিশুকে ফর্সা বানাতে
সহায়তা করে। কলা একটি আদর্শ খাদ্য। গর্ভবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে গর্ভে থাকা বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
এতে যেমন শিশুর গায়ের রঙ ফর্সা করে তেমনি তার মেধা বিকাশ এ সহায়তা করে।
এছাড়া কমলালেবু ও নারিকেল খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। আবার চেরি ফল এ সময়
খেলেও বেশ উপকারিতা পাওয়া যায়। কেননা চেরিতে প্রচুর পরিমানে আন্টি
অক্সিডেন্ট থাকে যা বাচ্চার গায়ের রঙ ফর্সা করতে ও বাচ্চার শরীরে পুষ্টি যোগাতে
অনেক সাহায্য করে। আশা করছি কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয় সেই
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ মন্তব্যঃ নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন
প্রিয় পাঠক আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন, তাহলে আশা করছি
এতক্ষণে আপনারা নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন তা জানতে পেরেছেন। আমার
লেখা আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার
করতে ভুলবেন না। যাতে করে তারাও এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url