গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয় - গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বাড়ানোর খাবার
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয়? এটা নিয়ে অনেক বাবা মা বেশ চিন্তিত থাকেন। আবার গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বাড়ানোর খাবার কি এটা নিয়েও অনেকে মনে প্রশ্ন থাকে। আজকের আলোচনায় আপনাদেরকে এ সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানাতে চলেছি। এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল।
আজ এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের আরো জানাতে চলেছি যে, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয়, গর্ভাবস্থার যে সকল খাবার খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়, গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবেনা, গর্ভাবস্থায় যে সকল ফল উপকারি ইত্যাদি। সম্পূর্ণ তথ্য গুলো জানতে আমাদের পাশে থাকুন।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বাড়ানোর খাবার:
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের সঠিক পুষ্টির প্রয়োজন তা না হলে বাচ্চা অপুষ্টিতে ভোগে। গর্ভাবস্থায় সঠিক পুষ্টির অভাবে আমাদের দেশের অনেক শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। শিশুর সঠিক ওজন, উচ্চতা ও শারীরিক গঠন নিশ্চিত করার জন্য গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের খাবারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের ১০ থেকে ১২ কেজি ওজন বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক।
জন্মের সময় একটি শিশুর ওজন কম থাকলে অপুষ্টির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বারবার অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এই জন্য গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির জন্য কিছু খাবার খেতে হয়। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বাড়ানোর খাবার সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
দুগ্ধ ও ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারঃ দুগ্ধ জাতীয় খাবার যেমন দই, দুধ, পনির ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। এ সকল খাবার শিশুর ওজন, শারীরিক গঠন এবং উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে ডিমের কুসুম, কলিজা, কমলা, ছোট মাছ ইত্যাদি খেতে পারেন। এছাড়া গর্ভের বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড জাতীয় খাবারঃ গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের প্রচুর পরিমাণে আয়রন যুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত। আয়রন গর্ভের শিশুর রক্ত সঞ্চালন সঠিক রাখে এবং ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।আয়রন ও ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন পালং শাক, কচু শাক, রেডমিট, বিটরুট, পাঁচমিশালী ডাল, কলিজা, লিভার ইত্যাদি গর্ভাবস্থায় খেলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
প্রোটিন জাতীয় খাবারঃ প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন ডিম, মাছ, মাংস, মটরশুটি, বাদাম, খেজুর পনির ইত্যাদি গর্ভাবস্থায় শিশুর স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।প্রোটিন শিশুর মাংসপেশি ও কোষ গঠনের সহায়তা করে।
প্রচুর পানি পান করাঃ গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের প্রচুর পানি পান করার প্রয়োজন হয়। গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া সঠিক থাকে এবং শিশুর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ৮ থেকে ১০-১০ পানি পান করা উচিত।
ফলমূল ও শাকসবজিঃ ফলমূল ও শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার থাকে। যা শিশু শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশের সাহায্য করে। এজন্য প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কলা, আপেল পেয়ারা এবং বিশেষ করে ভিটামিন সি যুক্ত ফল রাখা জরুরী। এবং বিভিন্ন সবুজ শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।
গোটা বা পুরো শস্যঃ ব্রাউন চাল, পুরো গমের রুটি, ওট মিল ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও ফাইবার রয়েছে। শিশুর ওজন বাড়াতে এ সকল খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গর্ভাবস্থায় যে সকল ফল উপকারী:
একটি নারীর জন্য গর্ভাবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় যা খুশি তাই করা বা খাওয়া চলে না। কেননা বাচ্চার পুষ্টি এবং শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য একজন মায়ের ডায়েড মেন্টেন করতে হয়। এ সময় খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফল মূল শাকসবজি রাখা উচিত। এমন কিছু ফল যা গর্ভাবস্থায় খুবই উপকারী সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ
কলাঃ গর্ভাবস্থার প্রতিদিন ১-২একটি কলা খাওয়া উচিত। কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও লৌহ থাকে। যা গর্ভের বাচ্চার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কলার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তাই গর্ভাবস্থার প্রতিদিন কলা রাখুন।
আপেলঃ আপেলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। একজন গর্ভবতী মায়ের আয়রনের স্বল্পতা পূরণ করতে প্রতিদিন একটি করে আপেল খাদ্য তালিকায় রাখুন।
পেয়ারাঃ পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং আয়রন থাকে। যার জন্য এই ফল গর্ভাবস্থায় খাওয়া খুবইগুরুত্বপূর্ণ। সারা বছর পাওয়া যায় এবং দাম হাতের নাগালে থাকায় এই ফল ফলের তালিকায় প্রথমেই থাকে।
কিউইঃ এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড, ফাইবার,ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই বিদ্যমান। এ সকল উপাদান গর্ভকালীন মায়ের হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিসের সমস্যা সমাধানে কিউই বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
কমলাঃ কমলা লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় এই ফলটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আয়রন শোষণে সাহায্য করে। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড বিদ্যমান। গর্ভকালীন সময়ে বাচ্চার শারীরিক বিকাশে এই ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা:
আনারসঃ রস, গন্ধ ও স্বাদে ভরা টক মিষ্টি ফল আনারস খেতে অনেকেই ভালোবাসে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা আনারসে প্রচুর পরিমাণে ব্রোমেলিন পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে মহিলাদের জরায়ু নরম হয়ে বাচ্চা প্রসবের আশঙ্কা থাকে অর্থাৎ গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় এই ফলটি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
পেঁপেঃ পেঁপের নানার উপকারিতা থাকলেও গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকার কথা বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন। গর্ভাবস্থায় দুই তিন মাসের মধ্যে পেঁপে খাওয়া মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ সময় পেঁপে খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পেঁপেতে বিদ্যমান প্যাপেইন উপাদান কি গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর।গর্ভাবস্থায় কাঁচা বা পাকা কোন পেঁপে খাওয়া উচিত নয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
আঙ্গুরঃ গর্ভাবস্থায় আঙ্গুর খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।আঙুর খেলে শরীরের ভেতরে অনেক গরম অনুভূত হয় যা গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর। আঙ্গুল উৎপাদনের সময় তাতে অনেক কীটনাশক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবং এই ফলকে ভালো রাখার জন্য ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। যা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য খুবই ক্ষতিকর।
তেঁতুলঃ গর্ভবতী নারীরা সাধারণত প্রচুর পরিমাণে টক বা তেঁতুল খাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। গর্ভের বাচ্চার কোষের ও ক্ষতি হতে পারে অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া। বিশেষ করে প্রথম ত্রৈমাসিকে অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
দীর্ঘদিন হিমায়িত ফলঃ কোন ফল অনেকদিন ধরে বরফে জমানো বা ফ্রিজে রাখলেতা গর্ভাবস্থায় খাওয়া নিষেধ। অনেকদিন ফ্রিজে রাখা ফলের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ কমে যায়। বেশিরভাগ হিমায়িত ফলে ফরমালিন ও প্রিজারভেটিভ দেওয়া থাকে। এটি মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই বিষাক্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে টাটকা ফল পরিষ্কার করে ধুয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
আশা করি, গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা এটা আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এবার আসুন গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয় সে সম্পর্কে জানব।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয়:
প্রত্যেকটা পিতা মাতায় চান তার বাচ্চা যেন মেধাবী হয়। একটি বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ তার মায়ের গর্ভ থেকেই শুরু হয়। মূলত গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ২৫ % ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট হয়ে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় খাবার গ্রহণ বাচ্চার ব্রেনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে অনেকেই জানতে চান গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয় ? এখন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। গর্ভাবস্থায় মাছ, দুধ, ডিম, বাদাম এ সকল প্রোটিন জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
ওমেগা থ্রি এবং ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার গর্ভাবস্থায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি এবং কলিনযুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা খুবই জরুরী। কেননা এ সকল খাবার বাচ্চার মেধা বৃদ্ধি এবং শারীরিক পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয় সে সকল খাবার নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
প্রোটিন যুক্ত খাবারঃ গর্ভের বাচ্চার জন্য প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন ডিম, মাছ, মাংস, বাদাম,দই, বিভিন্ন ধরনের ডাল ইত্যাদি গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।গর্ভাবস্থায় বাচ্চার মেধা বিকাশে প্রোটিন যুক্ত খাবারের কোন বিকল্প নেই।
ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারঃ ভিটামিন ডি শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন ডিম, দুধ, পনির, মাংস এর পাশাপাশি সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ভিটামিন ডিযুক্ত খাবার রাখতে হবে।
আয়রন ও ফলিক এসিড যুক্ত খাবারঃ কলা, পেয়ারা, আপেল, শুকনো ফল,ডাল, পালং শাক,এবং সবুজ সবজিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ফলিক এসিড থাকে। এসব খাবার গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। কেননা বাচ্চার মেধাবিকাশে আয়রন ও ফলিক এসিড বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবারঃ সামুদ্রিক মাছ, আয়োডিনযুক্ত লবণ এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন রয়েছে। গর্ভাবস্থায় আয়োডিনের অভাবে শিশুর ব্রেনের বিকাশ ব্যাহত হতে পারে।গর্ভাবস্থায় আয়োডিনের অভাব পূরণ করতে খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছ, ডিম, কলিজা, ভুট্টা, আয়োডিন যুক্ত লবণ, গলদা চিংড়ি ইত্যাদি রাখুন।
কলিন যুক্ত খাবারঃ কলিন যুক্ত খাবার গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কলিন যুক্ত খাবারের মধ্যে ডিমের কুসুম অন্যতম।
ব্লুবেরিঃ ব্লুবেরি গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ব্রেনের বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্লুবেরিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি -অক্সিডেন্ট বিদ্যমান। ব্লুবেরির বিকল্প হিসেবে স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি বা কালোজাম, রাস্পবেরি, টমেটো, ডাঁটা ইত্যাদি হাওয়া যেতে পারে।
ওমেগা থ্রি জাতীয় খাবারঃ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডযুক্ত খাবারের তালিকায় রয়েছে কুমড়ার বিচি, সূর্যমুখী দানা,বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ যেমন সেমন, টুনা, কড লিভার অয়েল ও ম্যাকেরেল ইত্যাদি।সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে DHA থাকে যা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ব্রেনের বিকাশে সহায়তা করে। গর্ভধারণের চতুর্থ মাস থেকে ওমেগা থি ফ্যাটি এসিড জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে শুরু করুন।
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবেনা:
গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়া খুবই উপকারী। তার কারণ মাছের চর্বিহীন প্রোটিন যা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ব্রেনের বিকাশে সহায়তা করে। সামুদ্রিক মাছ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং DHAএর ভালো উৎস । মাছে রয়েছে উচ্চ মানের প্রোটিন ও ভিটামিন ডি যা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ব্রেনের বিকাশ করে এবং হাড় ও কোষ গঠনে সাহায্য করে।তাই গর্ভাবস্থায় মাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার।
কিন্তু কিছু কিছু মাছ গর্ভাবস্থায় খুব বিপদজনক হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানান।যে সকল মাছে অতিরিক্ত পরিমাণে পারদ থাকে সে সফল মাছ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে বড় আকারের প্রিডেটর মাছগুলি অনেক বেশি পারধ ধারণ করে। যেমন সার্ক, টাইলফিশ, সোর্ডফিশ, কিং মেকারেল, টুনা ইত্যাদি। এ সকল মাছে মিথাইল মার্কারির পরিমাণ বেশি থাকায় গর্ভাবস্থায় এ সকল মাছ এড়িয়ে চলা উচিত।
গর্ভাবস্থায় যে সকল খাবার খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়:
অধিকাংশ মানুষেরই আকাঙ্ক্ষা থাকে যেন গর্ভের সন্তান ফর্সা হয়। তাই অনেকে জানার আগ্রহ থাকে গর্ভাবস্থায় কি কি খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। আসলে বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্য গ্রহণের উপর বাচ্চার গায়ের রং কেমন হবে তা নির্ভর করে না বরং পিতা-মাতার জিনগত কারণে বাচ্চার গায়ের রং কালো বা ফর্সা হয়ে থাকে।তারপরও মানুষের ধারণা কিছু কিছু খাবার যা গ্রহণ করলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। সেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
নিয়মিত দুধ পানঃ গর্ভাবস্থায় নিয়মিত দুধ পান করলে বাচ্চার গায়ে রং ফর্সা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাচ্চার হাড়,মেধা ও ত্বক ভালো রাখার পাশাপাশি বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে দুধ। প্রচলিত ধারণা মতে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত দুধ পান করলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়।
ডিমঃ ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। গর্ভাবস্থায় এই খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। কেননা ডিমের পুষ্টিগুণ গর্ভাবস্থায় বাচ্চার অনেক ধরনের উপকার করে থাকে। আর অনেকে ধারণা ডিমের সাদা অংশ ফেলে বাচ্চা গায়ের রং ফর্সা হয়।
জাফরান দুধঃ রূপচর্চায় জাফরের কিছু ভূমিকা রয়েছে। সেখান থেকেই অনেকের ধারণা যে গর্ভাবস্থায় কেশর গ্রহণ করলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হবে। তাই গর্ভাবস্থায় অনেকে দুধের সাথে কেশর মিশিয়ে গ্রহণ করে থাকেন।
নারিকেলঃ গর্ভাবস্থায় নারিকেলের সাদা অংশ গর্ভের বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি ফর্সা ও উজ্জ্বল বাচ্চা চান তাহলে গর্ভাবস্থায় নারিকেলের সাদা অংশ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
বাদামঃ বাদাম অত্যন্ত পুষ্টি সম্পন্ন একটি শুকনো ফল। যেকোনো বাদাম গর্ভাবস্থায় খাওয়া যেতে পারে। অনেকেই আবার মনে করেন দুধের সাথে বাদাম মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে। এতে বাচ্চার গায়ের রং ও ফর্সা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কমলালেবুঃ গর্ভাবস্থা প্রচুর পরিমাণে ফলমূল খাওয়া উচিত। কেননা ফলমূলের বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ গর্ভের বাচ্চার জন্য খুবই জরুরী। তাদের মধ্যে কমলালেবুর উপকারিতা অনেক বেশি। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফল গর্ভের বাচ্চার জন্য খুবই উপকারী এবং গায়ের রং পরিষ্কার করতে ও সাহায্য করে।
ঘিঃ শুধু বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে নয় ঘি বাচ্চার ব্রেনের বিকাশের সহায়তা করে থাকে। ঘি এর নানান উপকারিতা রয়েছে। অনেকে ধারণা গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকায় ঘি থাকলে গর্ভের বাচ্চার রং উজ্জ্বল হয়।
মৌরিঃ মৌরি ভেজানো পানি ত্বকের বর্ণ উজ্জ্বল করে। গর্ভবতী নারীদের প্রতিদিন মৌরি ভেজানো পানি খাওযালে গর্ভের বাচ্চা বর্ণ উজ্জ্বল হবে বলে মনে করা হয়। এছাড়াও ময়ূরীর অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন গর্ভাবস্থায় হজমের সমস্যা বা গ্যাসের সমস্যা দূর করতে মৌরি ভেজানো পানি খেতে পারেন।
চেরি ও বেরি জাতীয় ফলঃ চেরি ও বেরি জাতীয় ফল ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের ক্ষতি রোধ করতে সহায়তা করে। এই জাতীয় ফলে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এই জাতীয় ফল যেমন স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি, ব্লুবেরি ইত্যাদি খেলে ত্বক সুন্দর হয়। তাই গর্ভাবস্থায় এ সকল ফল খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
টমেটোঃ সূর্যের আলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করতে টমেটোতে থাকা লাইকোপেনর ভূমিকা রয়েছে। গর্ভাবস্থায় টমেটো খেলে বাচ্চার গায়ের বর্ণ ফর্সা হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
লেখক এর মন্তব্য: গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয়
আজকে মূল আলোচনার বিষয় ছিল গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বাড়ানোর খাবার সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি, আপনারা এ সকল বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে পেরেছেন। গর্ভকালীন সময় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়।এ সময় মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য অতিরিক্ত সতর্ক থাকার প্রয়োজন পড়ে। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার মেধা এবং শারীরিক গঠন যেন সুষ্ঠুভাবে হয় সেজন্য সকলের সঠিক তথ্য জেনে এবং মেনে চলা উচিত।
এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি গর্ভাবস্থায় কি কি করণীয় সে সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পেরে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিন। এরকম আরো শিক্ষামূলক তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটটি ভিজিট করতে পারেন। সময় নিয়ে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url