মেয়েদের জন্য হালাল পেশা - মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন তা জানুন

মেয়েদের জন্য হালাল পেশা কোনটি এবং মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন তা জানতে চান? কিন্তু কোথাও কোন সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না? তা হলে এই আর্টিকেলটি কেবলমাত্র আপনার জন্য যেখানে আপনি জানতে পারবেন, মেয়েদের জন্য হালাল পেশা কোনগুলো এবং মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন
এখানে আরো জানবেন, মেয়েদের জন্য কোন চাকরি ভালো হবে এবং মেয়েদের জন্য কোন ক্যাডার ভালো হবে বিসিএসে তা জানতে পারবেন।

ভূমিকা: মেয়েদের জন্য হালাল পেশা - মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন

বর্তমান সময়ে নারীরা ও পুরুষদের তুলনায় কোন অংশে পিছিয়ে নেই। তারা ও পুরুষদের ন্যায় সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশকে ‍উন্নতির দিকে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছেন। নারীরা ও যে ইসলামিক শরিয়াহ এর মধ্যে থেকে যাবতীয় সকল কাজ করতে পারেন, তার প্রতিফলন আমরা প্রতিটি উন্নয়নের দেখতে পাই।
ইসলামে নারীদের কোন কিছুতেই বাধা দেয় না। নারী দ্বীনের পথে থেকে, পরিবারের হক আদায় করে যেকোন পেশায় যোগদান করতে পারেন। কিন্তু নারীদের জন্য এটি জানা খুব জরুরী যে- ইসলামে মেয়েদের জন্য হালাল পেশা কোনটি। মেয়েদের সেই সকল পেশাতেই যোগ দান করা উচিত, যেগুলো ইসলামের মূলনীতি এবং নৈতিকতা বজায় রাখে। মেয়েদের জন্য হালাল পেশা সম্পর্কে এবং মেয়েদের জন্য কোন চাকরি ভালো তা জানতে সমস্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মেয়েদের জন্য হালাল পেশা

মেয়েদের জন্য হালাল পেশা বলতে সেই সকল পেশাকে ‍বুঝায়, যেই পেশা গুলো ইসলামিক সকল বিধি বিধান মেনে করা যায়। যেই পেশার আয় রোজগার হবে বৈধ্য এছাড়া উক্ত পেশায় নারী ও পুরুষের মাঝে শালীতা বাজায় থাকতে হবে। তাহলে সেই পেশা মেয়েদের জন্য হালাল পেশা বলে গন্য হবে। চলুন জানি আরো কিছু হালাল পেশা সম্পর্কে-
মেয়েদের জন্য হালাল পেশা
শিক্ষকতা: মেয়েদের জন্য সবচেয়ে সহজ এবং মানসম্পূর্ণ একটি পেশা হলো শিক্ষকতা করা। যা সম্পূর্ণ বৈধ্য এবং হালাল আয়ের একটি মাধ্যম। যেখানে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক নিজেকে পর্দার মাঝে রাখা যায়। মেয়েদের জন্য আলাদা যে স্কুল বা কলেজ রয়েছে, সেখানে পাঠদান করাতে পারেন।

ফিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি পেশা যা নারী-পুরুষ উভয়ই করতে পারে। আর নারীদের জন্য বড় সুবিধা হলো এটি ঘরে বসেই করা যায়। এটির জন্য বাহিরে কোথাও যেতে হয় না। সেক্ষেত্রে পর্দা বজায় রাখার পাশাপাশি পরিবারের হক ও আদায় করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং ইসলামিক ভাবে বৈধ্য এবং হালাল উপর্জনের একটি মাধ্যম। তাই মেয়েদের জন্য সবচেয়ে উত্তম পেশা হলো ফ্রিল্যান্সিং।
হস্তশিল্পের কাজ: হস্তশিল্পের কাজ ঘরে বসে করা যায় বিধায় এটি নারীদের জন্য উত্তম এবং হালাল একটি পেশা। এই উপার্জিত অর্থ সম্পূর্ন বৈধ্য। এছাড়া এই কাজে কোন কর্মচারী প্রয়োজন হলে নারী কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে পর্দা ঠিক থাকে, সেজন্য এই পেশা হালাল পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মেয়েরা পোশাক ডিজাইন, কুঠির শিল্প এবং হস্তশিল্প নিয়ে কাজ করে সফল হচ্ছেন।

অনলাইন ব্যবসা: অনলাইন ব্যবসা একটি হালাল পেশা হিসেবে বিবেচনা করা যায়। আর ব্যবসা মেয়েরা ও করতে পারে। যদি সেটি শালীনতা এবং সততার সাথে প্রচালিত হয়ে থাকে। বর্তমানে অনেক মেয়েই ইলামিক শরিয়াহ ভিত্তিক ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে ইনকাম করছেন। এটি সম্পূর্ন হাল একটি পেশা।

মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন

এই ঘুগে সবাই চায় তার নিজ অর্থায়নে চলতে এবং তার সার্মথ্য অনুযায়ী পরিবারকে সাহায্য করতে। সেক্ষেত্রে মেয়েরা ও চায় নিজে অর্থিক ভাবে সক্ষম হওয়ার পাশাপাশি যাতে পরিবারকে কিছুটা সাহায্য করা যায়। আর প্রতিটি মেয়ের জন্যই কর্মমুখী হওয়া অত্যন্ত জরুরু। চলুন জানি মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন-

আর্থিক স্বাধীনতা: মেয়েরা চাকরি করলে তারা তাদের নিজ অর্থায়নে চলতে পারেন। যা তাদের স্বনির্ভরতার বহিঃপ্রকাশ। যেখানে সে নিজে স্বচ্ছল ভাবে চলতে পারেন এবং পারিবারিক ভাবে সবার পাশে থাকতে পারেন। যা তাদের ব্যক্তি জীবনে সুরক্ষা এবং মযর্দা বাজায় রাখতে সহায়তা করে। আর মেয়েদের পারিবারিকি আর্থিক সহযোগিতা পরিবারকে আরো স্বচ্ছল করে তোলে।
আত্মসম্মানবোধ রক্ষা: মেয়েরা চাকরি করলে তাদের আত্মসম্মানবোধ ও বেড়ে যায়। এর ফলে কোন বিষয়ে মতামতের ক্ষেত্রে তার অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া সামাজিক অবস্থান ও মজবুত হয়। যার কারনে সবাই তাকে মূল্য দেয় এবং তার কথায় সবাই গুরুত্ব দেয়। তাই নিজের চাহিদা এবং অধিকার বজায় রাখতে মেয়েদের কর্মমুখী হওয়া ‍উচিত।

প্রতিভার বহিঃপ্রকাশ: মেয়েরা যে ছেলেদের থেকে অনেক ভালো কোথাও পৌঁছাতে পারে এবং মেয়েরা যে ছেলে থেকে কম মেধাবি হয় না তা প্রমান করার সুযোগ পান। এছাড়া চাকরির মাধ্যেমে মেয়েরা তাদের প্রতিভা এবং দক্ষতা বিকাশে সুযোগ পেয়ে থাকে। কর্মক্ষেত্রে কাজের মাধ্যমে ছেলেদের সাথে মেয়েরা ও দেশ এবং দশের উন্নিতিতে অগ্রসর হতে পারেন।

সামাজিক পরিবর্তন: মেয়েরা চাকরি করলে শুধুমাত্র আর্থিক স্বনির্ভরশীল হয়ে থাকেন তা না। এতে করে পরিবার ও সামাজিক ভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। কোন চাকরি জীবী মেয়েদের দেখে অন্য মেয়েরা বা পরের প্রজন্ম মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখে। এছাড়া তা সন্তানদের উপর একটি ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে।

মেয়েদের জন্য কোন চাকরি ভালো

সকল মেয়েদেরই একটি স্বপ্ন থাকে একটি ভালো চাকরি করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এবং পরিবারকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা। কিন্তু বেশির ভাগ মেয়েরাই জানেন না কোন চাকরিটি তার জন্য ভালো হবে এবং কোন চাকরিটি তাকে সার্বিক নিরাপত্তা বহন করবে। এছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে কোন চাকরিটি তার নিরাপদ ও উপযুক্ত বলে ব্যাবিচিত হবে। চলুন জেনে নেই মেয়েদের সে সকল চাকরি সম্পর্কে-

শিক্ষকতা: মেয়েদের জন্য শিক্ষকতার চাকরি খুবই উপযুক্ত এবং সম্মানের একটি চাকরি। যেই চাকরিতে শিক্ষা প্রদান করে একটি শিক্ষিত সমাজ তৈরী করা যায়। মেয়েদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ও নিরাপদ হলো সরকারি প্রাইমারি স্কুলের চাকরি। যেই চাকরি মেয়েরা তাদের বাসা থেকেই করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তারা চাকরি করার পাশাপাশি সংসার গুছাতে ও সক্ষম হয়। যার ফলে ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন এবং সামাজিক জীবনে একটি ভারসাম্য বজায় রেখে চলাচল করতে পারে।
ব্যাংকার: এই সেক্টরগুলোতে পুরুষের চেয়ে নারীরা অনেক বেশি সফল, তা বিভিন্ন ব্যাংকগুলো ভিজিট করলেই জানতে পারবেন। ব্যাংকিং সেক্টর চাকরিগুলোতে মেয়েরা অনেক বেশি নিরাপত এবং তাদের উজ্জ্বল ভবিষৎ গড়ার লক্ষে উপযুক্ত একটি চাকরি। তবে অবশ্যই সরকারি ব্যাংক হতে হবে। সরকারি ব্যাংকগুলোতে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার পাশাপাশি আর্থিক সুবিধা ও পাওয়া সম্ভব।

পাইলড বা বিমানবালা: বিভিন্ন এয়ালায়েন্সগুলোতে পাইলড এবং বিমানবালারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেখানে অনেক ভালো বেতনের সাথে বিভিন্ন দেশ ঘোরার ও সুয়োগ রয়েছে। এছাড়া এই চাকরি গুলো সার্বিক নিরাপত্ত ও সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। এই চাকরি সকলের কাছে সম্মানিত একটি চাকরি। তাই আপনি সার্বিক বিবেচনা করে উপযুক্ত একটি চাকরি খুঁজে থাকেন, তাহলে পাইলড বা বিমানবালার চাকরি হতে পারে আপনার স্বপ্ন পূরণের একটি অংশ।

সমাজ কর্মী: দেশের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় অবদান সমাজকমীদের। তারা সমাজসেবা বা নানা সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রাখতে সক্ষম। হতে পারে সেটি গরিব বা নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো অথবা হতে অসহায় মানুষকে সাহায্য করা। যেই কাজ গুলোতে নারীরা ও মানসিক ভাবে প্রশান্তি লাভ করে। এই ধরনের চাকরিতে মানুষের উপকার করার পাশাপাশি, নিজে ও একজন সম্মানিত মানুষ হওয়া যায়।

মেয়েদের জন্য কোন ক্যাডার ভালো

মেয়েদের জন্য বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কোন ক্যাডার ভালো হবে, তা নির্ভর করে আপনার কোন ক্যাডারের প্রতি আগ্রহ বেশি, সেই অনুযায়ী আপনার অবস্থান কেমন তার উপর নির্ভর করে ক্যাডার চয়েচ দিতে হয়। প্রতিটি ক্যাডারেরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট এবং সম্মাননা রয়েছে। তবে বিশেষ করে মেয়েদের জন্য উপযুক্ত কিছু ক্যাডার রয়েছে, যেগুলোতে মেয়েরা অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। চলুন জানি বিসিএসে মেয়েদের জন্য কোন ক্যাডার ভালো-
মেয়েদের জন্য কোন ক্যাডার ভালো
পররাষ্ট্র ক্যাডার: যাকে ইংরেজিতে ফরেন ক্যাডার বলা হয়ে থাকে। এই কাজে মেয়েরা মূলত কূটনীতিক হিসেবে যোগদান করেন। যা বাংলাদেশে প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সুযোগ প্রদান করে থাকে। আপনার ইংরেজিতে অনেক দক্ষতা থাকে এবং ইংরেজি বলতে সাবলিল হয়ে থাকেন। এছাড়া অন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, তাহলে পররাষ্ট্র ক্যাডার আপনার জন্য উপযুক্ত একটি ক্যাডার চয়েচ।
প্রশাসন ক্যাডার: প্রশাসন ক্যাডার বা Administration Cadre হলো মেয়েদের জন্য উপযুক্ত এবং জনপ্রিয় একটি ক্যাডার চয়েচ, যা অনেকটা সম্মান এবং সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। এই ক্যাডারে যারা যোগদান করেন, তারা জেলা প্রসাশক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদে কাজ করেন। যা কেবলমাত্র প্রশাসনিক কাজ নয় এর পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে এবং সামাজিক দায়িত্ব পালনে আবদান রাখেন।

শিক্ষা ক্যাডার: শতভাগ হতে ৮০ ভাগ মেয়েরাই চায়, শিক্ষা ক্যাডারে যোগদান করতে। এর মূল কারণ হলো এই খাতে নিয়োগ অনেক বেশি হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি কলেজ গুলোতে শিক্ষকতার করার সুযোগ থাকে। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো নিজ জেলাতে এই শিক্ষা ক্যাডারে যোগদান করা যায়। যার কারনে পরিবারের কাছে থেকে শিক্ষাদান করা যায়। এই জন্য মেয়েদের নিকট শিক্ষা ক্যাডার অনেক বেশি পছন্দের এবং জনপ্রিয়।

লেখকের শেষ মন্তব্য: মেয়েদের জন্য হালাল পেশা - মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন

প্রিয় পাঠক, এতক্ষনে মেয়েদের জন্য হালাল পেশা কোনটি এবং মেয়েদের চাকরি কেন প্রয়োজন সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। আবার মেয়েদের জন্য কোন ক্যাডার ভালো এবং মেয়েদের জন্য কোন চাকরি ভালো সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। মেয়েদের সুযোগ দেওয়া উচিত, দেখবেন তারা অনেক ভালো কিছু করে দেখিয়েছেন।

বেশি ভাগ নারী ব্যর্থ হয় এই সুযোগ না থাকার কারনে। এতক্ষন আমাদের পাশে থাকায় এবং আপনার মূল্যবান সময় নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ায় আপনাকে সুস্বাগতম। এইরকম পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। এছাড়া কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url