রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি -বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার কারণ।

রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি এই বিষয়ে আমরা অনেকেই গুগলের কাছে জানতে চাই। রক্তে হিমোগ্লোবিলের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে সাধারণত রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া এই রোগটি হয়।যদি আপনি রক্তশূন্যতা সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে চান তাহলে একদম ঠিক জায়গায় এসেছেন। রক্তশূন্যতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল।
রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি

আজ এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাতে চলেছি রক্তশূন্যতা কি, রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি, রক্তশূন্যতার কারণ,রক্তশূন্যতা দূর করে যে সকল খাবার, হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়, বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার লক্ষণ, বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার কারন সকল বিষয়ে।

রক্তশূন্যতা কি:

রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া হল রক্তের একটি রোগ যেখানে লোহিত রক্ত কণিকা বা হিমোগ্লোবি স্বাভাবিক এর চেয়ে কম হয়ে থাকে। রক্তে বিদ্যমান হিমোগ্লোবিন নামে এই রঞ্জক পদার্থ যখন বয়স ও লিঙ্গ ভেদে স্বাভাবিক মাত্রার নিচে নেমে যায় তখন তাকে রক্ত শূন্যতা বা অ্যানিমিয়া বলা হয়।

হিমোগ্লোবিনের কাজ শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া। আর যখন এই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায় তখন শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং মাথা ঘোরা, বমি, শ্বাসকষ্ট এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মত লক্ষণ গুলো দেখা যায়। পুরুষের থেকে নারীরা বেশি রক্তশূন্যতায় ভোগে।

রক্তশূন্যতার কারণ:

রক্তশূন্যতার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে বেশিরভাগ রক্তশূন্যতার রোগীরা আয়রনের অভাবজনিত কারণে রক্তশূন্য হয়ে পড়ে। আসুন রক্তশূন্যতার বেশ কিছু কারণ সম্পর্কে জেনে নিই।

আয়রনের অভাব: সাধারণত রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া আয়রনের অভাব বা ঘাটতি থেকে হয়ে থাকে। বিশেষ করে নারীরা আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতায় ভোগেন। ঘন ঘন গর্ভধারণ এবং স্তন্যদান এর কারণে নারীরা বিশেষ করে আয়রনের ঘাটতি জনিত রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ায় ভোগেন।

আরবিসি স্বল্পতার করণে: কোন ব্যক্তির শরীরে যখন প্রয়োজনীয় আরবিসি তৈরি হয় না তখন সেই ব্যক্তি রক্তস্বল্পতায় বা শূন্যতায় ভোগে।যখন শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি , ভিটামিন ও খনিজের অভাব হয় তখন আরবিসি ঠিকমতো কাজ করতে পারেনা ফলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষরণ: পাকস্থলী বা আলসারের সমস্যার কারণে দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষরণ এবং অন্ত্রে কৃমির সংক্রমণ ও পাইলস রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মাধ্যমে শরীরের রক্ত সভ্যতা দেখা দেয়। যেসব নারীদের অনিয়মিত এবং অধিক ঋতুস্রাব হয় সে সকল নারীদের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

বংশগত কারণ: কখনো কখনো জেনেটিক বা বংশগত কারণে রক্তশূন্যতা রোগটি হয়ে থাকে। সিকেল সেল রক্তস্বল্পতা হল বংশগত রক্তস্বল্পতা। এক্ষেত্রে লোহিত রক্তকণিকা crescent আঁকা ধারণ করে হলে তারা দ্রুত ভেঙে যায় এবং রোগী অল্প তার কবলে পড়ে।

ভিটামিনের অভাব: ভিটামিন ১২ এবং ফোলেট শরীরের রেড ব্লাড উৎপন্ন করে সেল।এই দুই ভিটামিনের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। এজন্য পরিমাণ মতো মাংস খেতে হবে যা ভিটামিন ১২ এর চাহিদা পূরণ করবে । এবং সবজি আধা সিদ্ধ খেতে হবে তাতে ফোলেটের চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়া ফলিক এসিডের অভাবে ও রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে।

লোহিত রক্তকণিকা দ্রুত ভেঙে যাওয়া: হিমোগ্লোবিনের জিনগত রোগ থ্যালাসেমিয়া সহ বিশেষ কিছু ইনফেকশনে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জটিলতা জড়িত সমস্যার কারণে রোহিত রক্তকণিকা দ্রুত ভেঙ্গে যায় যার জন্য রক্ত সল্পতা সমস্যা হয়।

আশা করি রক্ত শূন্যতার কারণ সম্পর্কে আপনারা অবগত হয়েছেন। এবার আলোচনা করবো রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি সে সম্পর্কে।

রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি:

শরীরের রক্তশূন্যতা হলে বেশ কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা দেয়। যা দেখে আপনি বুঝবেন যে আপনার শরীরের রক্তের ঘাটতি চলছে। এবং সেটা দেখে তাৎক্ষণিক তার প্রতিকার করার চেষ্টা করবেন। রক্তস্বল্পতার বেশ কিছু লক্ষণ নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি

  • হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। যার জন্য অল্পতেই দুর্বল হয়ে পড়া ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এবং কোন কোন সময় শ্বাসকষ্ট জড়িত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • রক্তস্বল্পতার রোগীর শরীর ফ্যাকাশে বর্ণ ধারণ করে এবং চোখের নিচের অংশের লাল রং ফ্যাকাসে হতে শুরু করে।
  • রক্তস্বল্পতা রোগীদের বুক ধড়ফড় করা অর্থাৎ অস্বাভাবিক হার্টবিট,মাথা ঘোরা এবং মাথা ব্যাথা সমস্যা দেখা যায়।
  • রক্ত স্বল্পতার রোগীরা মানসিক বিষন্নতা, হতাশা এবং ক্ষুধামান্দায় ভোগে।
  • শরীরে আয়রন কমে গেলে রক্ত সল্পতা দেখা দেয় আর এ সময় অতিরিক্ত চুল পড়া প্রবণতা দেখা যায়। অতিরিক্ত চুল পড়া ও রক্ত সল্পতার হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
  • রক্ত স্বল্পতার কারণে জিহ্বা ও মুখে ঘা হয় এবং ঠোঁটের কোণে ক্ষত হতে পারে এবং চুলের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়।
  • রক্তস্বল্পতার রোগীদের হাত ও পায়ের নখ ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং হাত -পায়ে ঝিঝি ধরে।
  • রক্তস্বল্পতায় যেসব নারীরা ভোগে তাদের মাসিক নিয়মিত হয় না।
  • শিশু ও কিশোর কিশোরীদের ক্ষেত্রে শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং হাড় ও জয়েন্টে ব্যথা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।
  • প্রসবের গাড়ো রং,জন্ডিস ও পিত্তথলির সমস্যা ,উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যায় ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
এসব লক্ষণ কোন মানুষের মধ্যে দেখলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিন। আশা করি, রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। প্রফেসর্ব তো দূর করার কিছু খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো খেলে রক্তস্বল্পতা দূর করা সম্ভব এখন তা নিয়ে আলোচনা করব।

রক্তস্বল্পতা দূর করে যে সকল খাবার:

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকলে তাকে রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা বলে। প্রতিদিন আয়রন যুক্ত ফলমূল এবং শাকসবজি শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। এমন কিছু খাবার খাদ্য তালিকায় যোগ করুন যেগুলোতে আর পরিবার পরিবারে থাকে।রক্তস্বল্পতা দূর করে যে সকল খাবার সেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ

দুধ: দুধে খুব বেশি আয়রন না থাকলেও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বিদ্যমান। যেমন ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রোটিন। এ উপাদানগুলো রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়িয়ে রক্তশূন্যতা দূর করে। যে সব রোগীরা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত দুধ খাওয়ার অভ্যাস করুন।

কলিজা: কলিজায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও আয়রন বিদ্যমান। শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ করতে কলিজার কোন বিকল্প নেই। তাই যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কলিজা রাখার চেষ্টা করুন। গরু অথবা খাসি যেকোনো কলিজায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন।

ফলমূল: বিশেষ করে যে সকল ফলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যেমন আপেল, বেদনা, পেয়ারা, কমলা, কলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। একজন রক্তস্বল্পতা রোগীর শরীরের রক্তের যোগান দিতে এ সকল ফলমূল গ্রহণ করা উচিত। প্রতিদিন দুই থেকে তিন ধরনের ফল খেলে রক্তস্বল্পতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

শাকসবজি: রক্তস্বল্পতা দূর করতে শাক সবজির কোন বিকল্প নেই। বিশেষ করে যে সকল শাকসবজিতে আয়রনে ভরা যেমন কচু শাক, পালং শাক, গাজর, টমেটো, বিট রুট, লেটুস পাতা, ব্রকলি, ধনিয়া পাতা ইত্যাদি নিয়মিত খেলে রক্তশূন্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

খেজুর: খেজুর বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা একটি শুকনো ফল। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। রক্তস্বল্পতা দূর করতে প্রতিদিন ২-৪ করে খেজুর খাওয়া শুরু করুন।

মধু: মধুতে আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, কপার থাকায় রক্তস্বল্পতা দূর করতে এটি একটি খুব ভালো খাবার। প্রতিদিন এক চা চামচ মধুর সাথে অল্প পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে রক্তস্বল্পতা অনেকটাই দূর হয়ে যায়।

পালং শাক: পালং শাক আয়রনের ভান্ডার। এছাড়াও পালং শাকে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, সি,বি৯, বিটা কারেটিন ইত্যাদি। এ সকল উপাদান রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।

বাদাম এবং বীজ: আমরা অনেকেই জানি বাদাম খুবই পুষ্টিকর একটি শুকনো ফল। বাদামে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন চীনা বাদাম, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম ইত্যাদি নিয়মিত খেলে রক্তস্বল্পতা দূর হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বীজ কেমন সূর্যমুখী বীজ,কুমড়ো বীজ, শণ বীজ ইত্যাদি রক্তশূন্যতা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

বিট রুট: খুব অল্প সময়ে রক্তশূন্যতা দূর করতে বিটরুটের জুস খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান। রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য বিটরুটের জুস এর সাথে আপেলের জুস মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

সয়াবিন: সয়াবিন ভিটামিন ও আয়রনে ভরপুর। এছাড়াও বলে রয়েছে কিছু পরিমাণ চর্বি এবং প্রোটিন। সয়াবিনে বিদ্যমান সাইট্রিক এসিড রক্তস্বল্পনার সাথে লড়াই করতে পারে। মেয়েদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা প্রতিরোধে সয়াবিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডাল: নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ডাল থাকলে রক্তশূন্যতা হওয়ার কোন চান্স থাকে না। ডালে প্রচুর পরিমানে ফোলেট থাকে। আর এই ফোলেট শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। মসুর ডাল, মুগ ডাল, এমনকি মাসকালাইয়ের ডাল শরীরের জন্য উপকারী।

ডিম: ডিবে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, প্রোটিন এবং এন্টি -অক্সিডেন্ট থাকায় রক্তশূন্যতায় ডিম বেশ কার্যকর। ডিম শরীরে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তশূন্যতা রোগীদের জন্য ডিম একটি অন্যতম খাবার।

হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়:

শরীরে রক্তস্বল্পতা হলে রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যায়।হিমোগ্লোবিন কমে গেলে শরীর দুর্বল, কান্তি বোধ এবং শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কত হলে বা কত কমে গেলে রক্ত দিতে হয় তা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা।

হিমোগ্লোবিলের মাতা স্বাভাবিক রাতে আয়রনযুক্ত বিভিন্ন ধরনের খাবার নিয়মিত গ্রহণ করা জরুরী। পুরুষ ও মহিলাদের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা আলাদা আলাদা অবস্থানে থাকলে রক্ত দিতে হয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। নিচে আলোচনা করা হলোঃ

পুরুষদের ক্ষেত্রে: পুরুষদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১৩.৫ থেকে ১৭.৫ গ্রাম। প্রতি ডেসিলিটার । ১৩.৫ গ্রামের নিচে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা হলে সেক্ষেত্রে পুরুষদের শরীরে রক্ত দিতে হয়।

নারীদের ক্ষেত্রে: প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১২ থেকে ১৫.৫ গ্রাম। ১১ বা তার নিচে নেমে গেলে নারীদের শরীরে রক্ত দিতে হয়।

গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্র: গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১১ বা তার একটু বেশি থাকলে তাকে স্বাভাবিক বলে মনে করা হয়। এর নিচে চলে গেলে একজন গর্ভবতী নারীকে রক্ত প্রদান করতে হয়।

আশা করি, যারা জানতে চাচ্ছেন হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় তারা সঠিক তথ্য পেয়েছেন। এবার বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো নিয়ে আলোচনা করব।

বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার লক্ষণ:

আয়রনের অভাবে সাধারণত শিশুরা রক্তশূন্যতার ফাঁদে পড়ে। তাছাড়া আয়রনের ঘাটতি থাকলে বাচ্চার বৃদ্ধি ও বিকাশ ঠিকমতো হয় না। বাচ্চাদের রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ার কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যে লক্ষণ গুলো দেখে আপনি বুঝবেন আপনার বাচ্চা রক্তশূন্যতার শিকার সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলঃ
  • বাচ্চা সব সময় ক্লান্তি বোধ করে
  • বাচ্চাদের হাত পা ঠান্ডা থাকে
  • শরীর দুর্বল এবং বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ে
  • শ্বাস দ্রুত হয় বা শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয়।
  • বাচ্চাদের জিহ্বার, চোখ এবং ত্বকের রং ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া।
  • বাচ্চাদের স্বাভাবিক ওজন, বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যাহত হওয়া।
  • খাবারের প্রতি অরুচি।
এসব লক্ষণ দেখলে বুঝবেন আপনার বাচ্চা রক্তশূন্যতায় ভুগছে। তখন তাৎক্ষণিক ভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এবং আয়রন সমৃদ্ধ বিভিন্ন ফলমূল, শাক সবজি, মাছ, মাংস নিয়মিত খাওয়াতে হবে। বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার লক্ষণ সম্পর্কে জানলাম এবার চলুন বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার কারণ সম্পর্কে জানব।

বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার কারণ:

একটি নবজাতক যখন জন্ম নেয় তখন ও তার শরীরে উচ্চ মাত্রার হিমোগ্লোবিন থাকে। তারপর ধীরে ধীরে শিশুর বয়স যখন দুই মাস পার হয়ে যায় তখন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে থাকে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলা যায়। আমরা অনেকেই বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার কারণ সম্পর্কে অবগত নই। আর শিশুদের রক্তশূন্যতার প্রধান কারণ হলো লোহিত রক্ত কণিকা উৎপন্ন না হওয়া।
বচ্চাদের রক্তশূন্যতার কারণ

লোহিত রক্তকণিকা উৎপন্নের জন্য যে সকল উপাদান প্রয়োজন যেমন, আয়রন,ফলিক এসিড এবং ভিটামিন বি ১২। আর এসবের ঘাটতি পড়লেই একটি শিশুর রক্তশূন্যতায় ভোগে।বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার যেসব কারণ হিসেবে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা তা হলঃ
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ লোহিত রক্তকণিকা উৎপন্ন না হওয়া
  • লোহিত রক্তকণিকার দ্রুত ভেঙে যাওয়া
  • রক্তক্ষয় সংক্রান্ত কারণ
  • আয়রন স্বল্পতার কারণ
  • একিউট লিউকেমিয়া
  • ক্রনিক রেনাল ফেইলিউর
  • থ্যালাসেমিয়া
  • অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া
বাচ্চাদের রক্তশূন্যতা সচরাচর আয়রনের ঘাটতি থেকে হয়ে থাকে। বাচ্চার রক্তশূন্যতার লক্ষ্য করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে বাচ্চার কোন ধরনের রক্তশূন্যতা রয়েছে। সে অনুযায়ী চিকিৎসা এবং ডাক্তারের পরামর্শ খাওয়া-দাওয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

আরবের ঘাটতি জনিত সমস্যার কারণে রক্তচনতা হলে মশা আয়রন সেবনের পাশাপাশি বাচ্চাকে কলিজা, সবুজ শাকসবজি, বিটুরুট জুস, বেদেন এসব আয়রন জাতীয় খাবার প্রচুর পরিমাণে খাওয়াতে হবে। আর নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রে ৬ মাস বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া বাচ্চাদের নিয়মিত কৃমির ওষুধ সেবন করাতে হবে।

লেখকের মন্তব্য: রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি -বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার কারণ

প্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো কি কি এবং বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এছাড়াও রক্তশূন্যতা কি, রক্তশূন্যতা দূর করে যে সকল খাবার, রক্তশূন্যতার কারণ, হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়, বাচ্চাদের রক্তশূন্যতার লক্ষণ ইত্যাদি সকল বিষয়ে জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন। এবং কোন মন্তব্য থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। নতুন নতুন বিষয়ে তথ্য জানতে নিয়মিত এই সাইটটি ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url