কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে জেনে নিন।
প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই জানতে চান কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে। বর্তমান সময়ের ডায়াবেটিস রোগ অতি পরিচিত একটা সমস্যা। এ রোগে যারা আক্রান্ত তাদের খাবারে নানা ধরনের বিধি নিষেধ দিয়ে থাকে ডাক্তাররা। অনেকে আবার প্রাকৃতিক ভেষজ ওষুধের খোঁজ করে থাকেন। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা আলোচনা করব কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে। এই বিষয়ে জানার আগ্রহ থেকে যদি আপনি এই আর্টিকেলটিতে ক্লিক করে থাকেন তাহলে আপনি একদম ঠিক জায়গায় এসেছেন।
তাছাড়া আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা আর ও জানতে পারবেন,সুগার কমানোর ঘরোয়া উপায়, সুগার কমানোর ব্যায়াম এবং কোন ফল খেলে ডায়াবেটিস কমে এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত। এ সকল বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।
কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে
বিশ্বের প্রতিনিয়তই বাড়ছে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এই রোগের কোন স্থায়ী সমাধান নেই। শরীরচর্চা এবং ডায়েট এর মাধ্যমে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। অস্বাস্থ্যকর খাবার, অনিয়মিত ঘুম, শারীরিক পরিশ্রম না করা ইত্যাদি কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়াবেটিস রোগকে সকল রোগের আধার বলা হয়।
কেননা ডায়াবেটিস রোগ হলে কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তাই অনেকেই প্রাকৃতিক নিরাময়ের পথে হাঁটতে চান। আমাদের প্রকৃতিতে নানা ধরনের ঔষধি গাছপালা রয়েছে। আপনারা অনেকেই জানতে চান কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে। যে সকল গাছের পাতা ডায়াবেটিস নিরাময়ে সাহায্য করে নিচে তা আলোচনা করা হলোঃ
কস্টাস ইগনিআস:
কস্টাস ইগনিআস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে অনেক পরিমাণে এন্টি -ডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্য পাওয়ায় এর নাম ইনসুলিন প্ল্যানটো বলা হয়। তাছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।
আমেরিকান এক গবেষণায় দেখা যায়, কস্টাস ইগনিআস পাতা চিবিয়ে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেক কমে যায়। দিনে একটি কস্টাস ইগনিআস পাতা চিবিয়ে খেলেই কমবে সুগার। তাছাড়া এই পাতার পাউডার বা গুড়া করে রেখেও প্রতিদিন এক চামচ খেয়ে নিতে পারেন।
গাইনুরা প্রোকাম্বেন্স:
গাইনুরা প্রোকাম্বেন্স একটি বিদেশি ওষুধি গুণসমৃদ্ধ গাছ। বাংলাদেশে এই গাছটি ডায়াবেটিস গাছ হিসেবে পরিচিত। চীন ও সুইজারল্যান্ড এর বিজ্ঞানীদের দাবি প্রতিদিন খালি পেটে দুইটি গাইনূরা ফোকাম্বেন্স পাতা সেবনে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসার। আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, চীন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ ছাড়িয়ে এখন বাংলাদেশেও পাওয়া যাচ্ছে এই ডায়াবেটিস গাছ। এই ঔষধি গাছের নানার উপকারিতা রয়েছে।
ডায়াবেটিস সহ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, কিডনি ভালো রাখে, লিভার এবং ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে এই ঔষধি গাছের পাতা। এই গাছের পাতার সাথে নিম পাতা, কাঁচা হলুদ, রসুন ইত্যাদি মিশিয়ে পেস্ট করে ছোট ছোট মার্বেলের মতো বড়ি বানিয়ে নিন। এরপর এই বড়ি গুলো রোদে শুকিয়ে কাঁচের জারে ভোরে রেখে দিন।প্রতিদিন ১/২ টি বড়ি চিবিয়ে খেয়ে পানি পান করুন। এভাবে নিয়মিত খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে সুগার।
নিম পাতা:
নিম পাতার গুণাবলী বলে শেষ করা যাবে না। নিম গাছ পুরোটাই একটি ঔষধি গাছ। এই গাছের ছাল, শিকড়, পাতা সবকিছুই ঔষধি গুণসম্পন্ন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিম পাতার রস খুবই কার্যকরী। প্রতিদিন সকালে কিছু পরিমাণ পাতা নিয়ে বেটে তা থেকে রস বের করে নিয়ে গিলে খেয়ে ফেলুন। এবং তারপরে এক গ্লাস পানি পান করুন। এভাবে এক সপ্তাহ খেতে পারলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
তুলসী পাতা:
আপনারা অনেকে হয়তো তুলসী পাতার ঔষধি গুন সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। বিশেষ করে আমরা সর্দি- কাশি, গ্যাস, অম্বল ইত্যাদি রোগে তুলসী পাতার ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে তুলসী পাতার উপকারিতা। প্রতিদিন তুলসী পাতার রস এর সাথে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাই রক্তে সুগারের পরিমাণ কমাতে তুলসী পাতার রস প্রতিদিন খালি পেটে হওয়ার অভ্যাস করুন।
কারি পাতা:
খাবারে কারি পাতার বহুল ব্যবহার রয়েছে। তরকারিতে ও কারি পাতা ব্যবহার করা হয়। কারি পাতা সুগন্ধের জন্য বিশেষ পরিচিত। এই পাতা কে আবার মিষ্টি নিম পাতাও বলা হয়। আমরা অনেকে জানি কারি পাতা হজমে সাহায্য করে। কিন্তু কারি পাতার আরেকটি বিশেষ উপকারিতা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন সকালে কারি পাতা চিবিয়ে খেলে শরীরে ইনসুলিন উৎপন্ন হয় যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।
ভৃঙ্গরাজ পাতা:
গবেষণায় দেখা গেছে, ভৃঙ্গরাজ পাতায় অ্যান্টি ডায়াবেটিক হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাছাড়া কারি পাতায় বিশেষ এক ধরনের ফাইবার রয়েছে চা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ভিঙ্গরাজ পাতা সকালে খালি পেটে খেলে স্বাভাবিকভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।ফলে সারাদিন ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
অ্যালোভেরা:
অ্যালোভেরার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে। আমেরিকান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফরমেশন এর গবেষণায় দেখা যায়, অ্যালোভেরা তে হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সকালে খালি পেটে এলোভেরা খেলে শরীরে ইনসুলিন এর উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আতা গাছের পাতা:
কাস্টার্ড আপেল বা আতা গাছের পাতা চিবিয়ে খেলে রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। আমেরিকান ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের গবেষণায় দেখা গেছে, আতা গাছের পাতায় এন্টি-ডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই কার্যকরী।
সুগার কমানোর ঘরোয়া উপায়
ডায়াবেটিস অতি পরিচিত একটি রোগের নাম। একজন ব্যক্তি যেকোনো বয়সে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ডায়াবেটিস সাধারণত দুই ধরনের হয়। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস। যাদের শরীরে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস সেসব ব্যক্তিদের শরীরে উৎপন্ন হয় না। অপরদিকে টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা উৎপন্ন হলেও সঠিকভাবে কাজ করে না।
ডায়াবেটিস হলে কিছু ঘরোয়া উপায়ে এর প্রতিকার সম্ভব বলে মনে করা হয়। কিন্তু ডাক্তারদের মতে ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব নয়। কিছু প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপায়ে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। উপরের আলোচনায় আমরা জেনেছি কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে এখন সুগার কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
করলার জুস:
করলা বা তেতো জাতীয় জিনিস ডায়াবেটিসে বিশেষ উপকারী। করলাতে চ্যারিটিন এবং মোমোরডিসিন নামক দুটি উপাদান থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার জুস খান। তাছাড়া ভাতের সঙ্গেও সেদ্ধ করলা খেলে উপকার পাবেন।
ফাইবার যুক্ত খাবার:
ফাইবার যুক্ত খাবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে খাইবার যুক্ত খাবার খুবই ধীরে ধীরে শরীরে শোষণ হয়। আর তাই ব্লাড সুগার খুব তাড়াতাড়ি বাড়ার আশঙ্কা থাকে না। ফাইবার যুক্ত খাবারের মধ্যে শাক সবজি, ফল, বিভিন্ন ধরনের ডাল, গোটা দানা শস্য ইত্যাদি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন।
অল্প পরিমাণে বারে বারে খান:
ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার কমানোর একটি ভালো উপায় হচ্ছে ক্ষুদা পেলে অল্প পরিমাণে খাবার খান। একটু পরে আবারো কিছু খাবার খান। এভাবে বারে বারে অল্প পরিমাণে খাবার খেলে ব্লাড সুগারের মাত্রা হুট করে বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে না। হলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
প্রচুর পানি পান করুন:
পানির কোন বিকল্প নেই।আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা প্রয়োজন কেননা অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো:
আমাদের অসুস্থ থাকতে হলে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। ঘুম ঠিকমতো না হলে মানুষের শরীরের নানা অসুখ বিসুখ বাসা বাঁধে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের খুবই প্রয়োজন। তার পাশাপাশি মানসিক চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। মানসিক চাপ পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই মানসিক চাপ থেকে বিরত থাকুন।
শরীরচর্চা:
ডায়াবেটিসে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে থাকে। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটার অভ্যাস করুন। সকালে অথবা বিকালে যেকোনো এক সময় হাঁটার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন। তাছাড়া সাইকেলিং, সুইমিং, জগিং, দৌড়ানো এসবও আপনার ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে। আপনার সাধ্যের মধ্যে যেটুকু সম্ভব প্রতিদিন নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
মেথি:
মেথির উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মেথির ভূমিকা অপরিসীম। রাতে এক গ্লাস পানিতে দুই টেবিল চামচ মেথি বীজ ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে মেথি বীজসহ পানি পান করুন। মেথিতে প্রচুর ফাইবার বিদ্যমান। মেথিতে থাকা জৈব উপাদান ইনসুলিন কে উদ্দীপিত করে। ডায়াবেটিস প্রতিকার প্রতিদিন মেথি পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন:
চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিষের মতো কাজ করে। ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, মিষ্টি মিষ্টান্ন পরিহার করুন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে শরীরের ওজন বেড়ে যায় যা ডায়াবেটিসরোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ । চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার ছেড়ে সুষম খাবার যেমন, শাকসবজি, ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল , ফাইবার জাতীয় খাবার, মাছ, ডিম ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
সুগার কমানোর ব্যায়াম
ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক ডায়েট এবং শারীরিক ব্যায়াম একজন ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে সে সম্পর্কে আমরা জেনেছি এবার আসুন, সুগার কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ব্যায়াম যেগুলো ডায়াবেটিস রোগীরা অনায়াসে করতে পারেন। এবং নিয়মিত এ সকল ব্যায়াম করলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকতে বাধ্য। নিচে সে সকল ব্যায়াম নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
হাঁটাহাঁটি:
ডাক্তাররা ডায়াবেটিসের রোগীদের প্রধান পরামর্শ দিয়ে থাকেন প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা।প্রতিদিন হাঁটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে ডায়াবেটিস টাইপ টু রোগীদের জন্য হাঁটা একটি কম প্রভাবশালী ব্যায়াম। সপ্তাহে পাঁচ দিন হাঁটার চেষ্টা করুন। একবারে ৩০ মিনিট হাঁটতে না পারলে দুইবার হাঁটুন। সকালের নাস্তা করার এক ঘন্টা পর এবং রাতে খাওয়ার এক ঘন্টা পর ১৫ মিনিট করে হাঁটন।
সাইকেলিং:
ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার কমাতে সাইকেলিং খুব ভাল একটি ব্যায়াম। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট সাইকেল চালানোর অভ্যাস করুন। সাইকেল চালালে জয়েন্ট গুলোতে একটি দুর্দান্ত কার্ডিওভাস্কুলার ওয়ার্কআউট প্রদান করে। সপ্তাহে পাঁচ দিন ধীরে ধীরে আপনার গতি এবং সময় বাড়িয়ে সাইকেল চালানোর অভ্যাস করুন।
আরো পড়ুনঃ নিয়মিত রসুন খেলে শরীরের কি পরিবর্তন ঘটে।
সুইমিং:
সুগার কমানোর ব্যায়াম এর মধ্যে সুইমিং বা সাঁতার কাটা একটি দুর্দান্ত। কারণ সাঁতার কাটলে পুরো শরীরে ওয়ার্কআউট প্রদান করে। সাঁতার আপনার শরীরের পেশী প্রসারিত করে এবং জয়েন্ট গুলোর উপরে খুব বেশি চাপ দেয় না। সপ্তাহে ৩-৪ দিন অন্তত ১০ মিনিট সাঁতার কাটুন।
যোগাসন:
সুগার কমানোর ব্যায়াম এর মধ্যে আপনি যোগব্যায়াম খুব সহজে করতে পারবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ৩০ মিনিট যোগ ব্যায়াম করুন। খুব সহজ সহজ যোগ ব্যায়াম আছে যেগুলি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কম প্রভাবশালী। যোগ ব্যায়াম করলে মানসিক চাপ কমে যায় এবং শরীরের সার্বিক উন্নতি হয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার কমাতে নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে হবে।
নাচ করা:
চিকিৎসকদের মধ্যে, যারা নিয়মিত নাচের সঙ্গে জড়িত তাদের রক্তে শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। নাচ করলে শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যায়াম হয়। আচ্ছা ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া রান্না আসলে মন ও ভালো থাকে এবং শরীর ও ভালো থাকে। তাই প্রতিদিন ভালো মিউজিক চালিয়ে আধা ঘন্টা নেতে নিতে পারেন।
ভারোত্তোলন:
ভারোত্তোলন একটি প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ যা পেশী ভর উন্নত করে এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার আপনার ব্যায়ামের সঙ্গে ভারোত্তোলনকে সংযুক্ত করুন। এই ব্যায়ামটি করার আগে কোন একটি ভালো প্রশিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নেওয়া উত্তম।
কোন ফল খেলে ডায়াবেটিস কমে
ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে সব সময় একটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকে যে কোন ফল খাব কোন ফল খাব না। অনেকে ডাক্তারের কাছে জানতে চান কোন ফল ডায়াবেটিসে খাওয়া যাবে আর কোন ফল খাওয়া যাবেনা। আজকে আলোচনা করব কয়েকটি ফল যা ডায়াবেটিসের নির্ধারিত হয় খেতে পারবেন। এটা অনেকেরই জানা যে, ভিটামিন সি বা টক জাতীয় ফল ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য বেশ উপকারী।
যেমন আমড়া,আমলকি, কমলা, জামরুল, টক বড়, জলপাই, বাতাবি লেবু, কাঁচা আম ইত্যাদি। এইসব ফল ডায়াবেটিসের রোগীরা অনায়াসে খেতে পারবেন। তাছাড়া আপেল অত্যন্ত ফাইবার যুক্ত একটি ফল। ডায়াবেটিসের রোগীরা আপেল চিবিয়ে খেতে পারবেন। আপেলে উচ্চমাত্রায় ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
তবে আপেল জুস না করে কামড়িয়ে বা চিবিয়ে খাওয়া ভালো।ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবুজ আপেল বেশ উপকারী।জামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম অত্যন্ত উপকারী। তাছাড়া চেরি এবং স্ট্রবেরি খেলে ডায়াবেটিস রোগীরা বেশ উপকার পাবেন। পেয়ারা দেশীয় ফল সারা বছর পাওয়া যায়।
এই ফলে যেমন ফাইবার রয়েছে তেমনি ভিটামিনের ভরপুর। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পেয়ারা থাকতে পারে।অ্যাভোকাডো ও কিউই এই ফলগুলো বিদেশি হলেও এখন এবং বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এই দুটো ফল ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য বেশি উপকারী। নাশপাতি অত্যন্ত ফাইবার যুক্ত একটি ফল।যেহেতু রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে ফাইবার সাহায্য করে সেহেতু সকল ফাইবারযুক্ত বা আঁশযুক্ত ফল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
তরমুজ ও পেঁপে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী দুইটি ফল। এ দুটি ফল ও ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবেন। তবে সতর্কতার জন্য বলে রাখি যে, ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট অনুসারে ডায়াবেটিস রোগীদের সকল খাবার গ্রহণ করা উচিত। প্রত্যেকটা ফল অল্প পরিমাণে বারে বারে খেতে হবে। দিনে খাদ্য তালিকা ২-৩ ধরনের ফল রাখা যেতে পারে।
লেখক এর মন্তব্য : কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে:
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে আপনারা পুরো আর্টিকেলটি পড়ে অবগত হতে পেরেছেন যে, কোন গাছের পাতা খেলে সুগার কমে এবং সুগার কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। এছাড়া আমরা আরো আলোচনা করেছি সুগার কমানোর ব্যায়াম এবং কোন ফল খেলে ডায়াবেটিস কমে। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ডায়াবেটিস একটি জটিল সমস্যা। এ সমস্যার স্থায়ী কোন সমাধান না থাকলেও সঠিক খাদ্যাভাস, সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, শারীরিক ব্যায়াম এবং বিশেষজ্ঞদের উপদেশ মতো চললে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডায়াবেটিস রোগ থেকে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয় তাই এই রোগ হলে কোন অবহেলা নয়। সকল ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সঠিকভাবে জীবন যাপন করা।
প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন এবং তাদের ও পড়ার সুযোগ করে দিন। আর যদি আপনার বিশেষ কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url