মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয় এবং এর কাজ কি জেনে নিন ।
প্রিয় পাঠক, মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয় এই বিষয়ে জানার আগ্রহ থেকে আপনি এই আর্টিকেলে ক্লিক করেছেন? তাহলে আপনি একদম ঠিক জায়গায় এসেছেন। কেননা আমরা আজকে আপনাদের মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয় সহ মোনাস ১০ এর কাজ কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। মোনাস ১০ সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।
এই আর্টিকেলটি পুরো পড়লে মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয় তা আপনারা জানতে পারবেন। সেই সাথে আপনারা আরো জানতে পারবেন, মোনাস ১০ এর কাজ কি, মোনাস ১০ খাওয়ার নিয়ম, মেনাস ১০ খাওয়ার আগে না পরে, গর্ভাবস্থায় মোনাস ১০ খাওয়া যাবে কিনা,মোনাস ১০ এর দাম, মোনাস ১০ কি এন্টিবায়োটিক, মোনাস ১০ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং মোনাস ৫ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত। তাহলে আসুন এবার মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
মোনাস ১০ এর কাজ কি :
মেনাস ১০ অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ঔষধ প্রাপ্তবয়স্ক বা শিশু সকলের হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই ওষুধটি বাংলাদেশের সুপরিচিত একমি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি দ্বারা উৎপাদিত। যাদের ঠান্ডা, কাশি, কফ সমস্যা রয়েছে তাদেরকে সাময়িকভাবে এই ওষুধ সেবন করতে দেওয়া হয়।
মোনাস ১০ এর একটি সক্রিয় উপাদান হলো মন্টেলুকাস্ট যা লিউকোট্রিন নামক পদার্থের কার্যক্ষমতা বন্ধ করে।লিউকোট্রিন হলো এমন একটি পদার্থ যা এলার্জি বাড়াই এবং শ্বাসনালী সংকুচিত করে শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করে। মোনাস ১০ লিউকোট্রিন এর কার্যক্ষতা ব্যাহত করে শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে এবং শ্বাসকষ্ট সমাধানে সহায়তা করে।
তাছাড়া এলার্জি জনিত কারণে নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ হওয়া, হাঁচি, কাশি, চোখের চুলকানি ইত্যাদি সমস্যার সমাধান করে। আজকের আলোচনার মূল বিষয় হলো মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয়। এ বিষয়ে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
মোনাস ১০ খাওয়ার নিয়ম:
মোনাস ১০ খাওয়ার নিয়ম এবং মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয় সে সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথে থাকুন। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে মোনাস ১০ রাতে খাবারের পর একটি করে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত হাঁপানি ও এলার্জিজনিত রোগীদের ক্ষেত্রে দিনে একটি বড়ি একবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। মোনাস ১০ ট্যাবলেট এক গ্লাস পানি দিয়ে গিলে খাওয়া উত্তম। তবে প্রতিদিন একই সময়ে এই ওষুধ সেবন করা সবচেয়ে উত্তম।
কেননা প্রতিদিন একই সময় এই ওষুধ সেবন করলে তা শরীরে খুব ভালো কাজ করে। হাঁপানি বা এলার্জিজনিত উপসর্গ প্রতিরোধে মোনাস ১০ ট্যাবলেটটি নিয়মিত গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। যতদিন না পর্যন্ত আপনি আরোগ্য লাভ করবেন এমনকি আরোগ্য লাভের পরেও কয়েকদিন এই ট্যাবলেট ঠিক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা।
সব থেকে ভালো হয় এই ট্যাবলেটটি সেবনের পূর্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। তাছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্ক বা শিশুদের জন্য মোনাস ৫ মিগ্রা এবং মোনাস ৪ মিগ্রা ঔষধ রয়েছে। শিশুদের এই ওষুধটি সেবনের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এর সঠিক ডোজ নিশ্চিত করুন।
মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয়:
সাধারণত মোনাস ১০ দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য নিরাপদ একটি ঔষধ। রোগের লক্ষণ এবং তীব্রতা অনুযায়ী এই ওষুধ কতদিন খেতে হবে তা ডাক্তররা নির্ধারণ করে থাকেন। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০ দিন থেকে ১ মাস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।চিকিৎসকের মতে এই ওষুধ সেবনের মেয়াদ আরো কম বা বেশি হতে পারে।
কিছু কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা দীর্ঘমেয়াদি এই ওষুধ সেবন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তার মানে হচ্ছে যতদিন না পর্যন্ত আপনার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় ততদিন পর্যন্ত আপনি এই ওষুধ সেবন করতে পারবেন। যেকোনো ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন করা উচিত।
মোনাস ১০ খাওয়ার আগে না পরে:
আপনারা অনেকেই জানতে চান মোনাস ১০ খাওয়ার আগে না পরে খেতে হয়। উপরোক্ত আলোচনায় বোনাস ১০ কতদিন খেতে হয় তা আমরা জানতে পেরেছি। এখন জানবো মেনাস ১০ খাওয়ার আগে না পরে। সাধারণত খাওয়ার আগে বা পরে যে কোন সময় মোনাস ট্যাবলেট টি সেবন করা যেতে পারে।
তবে এই ট্যাবলেটটি রাতে খাবারের পর সেবন করা উত্তম।প্রতিদিন একই সময় এই ওষুধ সেবন করলে এই ওষুধের কাজ ভালো হয়। তবে কোনোভাবে যদি রাতের ডোজ মিস করেন এবং বিশেষ জরুরী হয়ে থাকে তাহলে পরদিন সকালে খেয়ে নেওয়া উত্তম।
গর্ভাবস্থায় মোনাস ১০ খাওয়া যাবে কিনা :
গর্ভাবস্থায় মোনাস ১০ ট্যাবলেটটি সেবন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণত মোনাস ১০ ঔষধটি খুব বেশি প্রয়োজন না হলে গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলা ভালো। তাছাড়া যে সকল মায়েরা স্তন্যদান করেন তাদের ক্ষেত্রেও এই ট্যাবলেটটি এড়িয়ে চলা ভালো। সব থেকে ভালো হয় আপনি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গর্ভাবস্থায় মোনাস ১০ সেবন করুন।
মোনাস ১০ এর দাম :
প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই মোনাস ১০ ট্যাবলেটটির দাম সম্পর্কে জানতে চান। মোনাস ১০ সাধারণত মনটেলুকাস্ট সোডিয়াম নামক উপাদান দিয়ে তৈরি যা হাঁপানি ও এলার্জি সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। বাংলাদেশে মোনাস ১০ ট্যাবলেট প্রতি পিচের মূল্য ১৭ টাকা। এবং মোনাস ১০ একটি প্যাকেটের মূল্য ৫২৫ টাকা হয়ে থাকে।
মোনাস ১০ কি অ্যান্টিবায়োটি:
মোনাস ১০ কোন এন্টিবায়োটিক ঔষধ নয়। এটি একটি লিউকোট্রিন রিসেপ্টর এন্টাগনিস্ট যা সাধারণত শ্বাসনালীর প্রদাহ কমায় এবং এলার্জি সমস্যা সমাধান করে। এজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় মোনাস ১০ ব্যবহার করা হয়। যেকোনো ওষুধের দোকানে এই ওষুধটি এভেলেবেল পাওয়া যায়। কোন এন্টিবায়োটিক ওষুধই দীর্ঘমেয়াদী নয় কিন্তু মোনাস ১০ একটি দীর্ঘমেয়াদী ঔষধ যা হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট সমস্যা সমাধানের সাহায্য করে।
মোনাস ১০ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
প্রত্যেক ঔষধেরই কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। সাধারণত মোনাস ১০ এর তেমন কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয় তা না জেনে অনেকে দীর্ঘদিন এই ঔষধ সেবন করলে কারো কারো ক্ষেত্রে যে সকল সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় সেগুলো হলঃ
- মাথা ব্যথা বা মাথা ঘোরা
- ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- বমি বমি ভাব
- জ্বর
- ডায়রিয়া বা পেট ব্যথা
- তন্দ্রাচ্ছন্নতা
- স্নায়ুবিক যন্ত্রণা
- অস্বাভাবিক আচরণ
- মুখ শুকিয়ে যাওয়া
- ঘুমের সমস্যা
- হতাশা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ
- জয়েন্ট বা মাংসপেশিতে ব্যথা
- ত্বকে ফুসকুড়ি ও চুলকানি
দীর্ঘদিন ধরে মেনাস ১০ ওষুধটি সেবন করলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হতে পারে। সেজন্য সঠিক ডোজ এবং কতদিন এই ওষুধ খেতে হবে তা একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে জেনে নেওয়া উত্তম।
মোনাস ৫ খাওয়ার নিয়ম:
মোনাস ৫ মুখে খাওয়ার একটি ঔষধ। ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের জন্য সাধারণত মোনাস ৫ ঔষধটি দেওয়া হয়। রাতের খাবারের পর এই ওষুধটি সেবন করা সব থেকে ভালো। তার কারণ এ ওষুধের প্রধান উপাদান মন্টেলুকাস্ট রাতে সব থেকে বেশি ভালো শোষণ হয়।এই ওষুধটি অ্যাজমা, কাশি অথবা এলার্জির সমাধানে বেশ কার্যকরী।
আরো পড়ুনঃ Viset 50 mg কিসের ঔষধ এবং খাওয়ার নিয়ম।
এই ওষুধটি হাঁপানির লক্ষণ গুলি প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। মোনাস ৫ ট্যাবলেটটি পানি দিয়ে গিলে খাওয়া উত্তম।তবে প্রতিদিন একই সময়ে এই ওষুধটি খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। তবে ৬ বছরের কম শিশুদের জন্য মোনাস ৪ ট্যাবলেটটি চুষে অথবা পানি দিয়ে খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে মোনাস ৫ খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসকে পরামর্শ নেওয়া সব থেকে ভালো হবে।
লেখকের মন্তব্য : মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয়
প্রিয় পাঠক, আজ আমাদের মূল আলোচনার বিষয় ছিল মোনাস ১০ কতদিন খেতে হয় এবং মোনাস ১০ এর কাজ কি যা আপনারা পুরো আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পেরেছেন। তাছাড়া মোনাস ১০ খাওয়ার নিয়ম, কাজ, দাম, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ে ও আপনারা অবগত হতে পেরেছেন।
আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে আমাদের পাশে থাকুন। আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময় দিয়ে ধৈর্য সহকারে এতক্ষন আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার বিশেষ কোনো মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url