মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন

মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সহ ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে অবগত নন বলেই র্আটিকেলটিতে ক্লিক করেছেন। আমি রাবেয়া রয়েছি আপনাদের সাথে, আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সহ চুলের যাবতীয় সকল সমস্যা সমাধান সম্পর্কে।
মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার
বাঙালি নারীর চুলের খোঁপা-সে তো ভুবন বিখ্যাত। চুল আজানলম্বিত হোক অথবা বব ছাঁট, বয়-কাট হোক অথবা পুষ্পিত খোঁপা-চুলের যথাযথ যত্ন না নিলে আপনার চুল ঝরে যাবে অকালেই। তাই মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা জরুরি।

ভূমিকা

নারীর সৌন্দর্যের অনেকটা নির্ভর করে ওই চুলের উপর। তাই চেহারার সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে চুলের ও যত্নের প্রয়োজন হয়। চুল পরিচর্যার প্রথম ধাপ হচ্ছে শ্যাম্পু। কিন্তু বাজারে প্রচলিত অধিকাংশ রাসায়নিক শ্যাম্পু চুলের উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি করে বেশি। এ কারণে আজকাল সৌন্দর্য সচেতন নারীরা রাসায়নিক শ্যাম্পুর পরিবর্তে চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায় হিসেবে প্রাকৃতিক ভাবে চুলের যত্ন করছেন।

আমরা কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করতে পারি। এই আর্টিকেলে কোন ব্যায়াম করলে চুল পড়া বন্ধ হবে, মাথার চুল পড়া বন্ধ করার উপায়, চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম, কি খেলে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানবো।

মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার

মেয়েদের বিভিন্ন কারনে চুল পড়তে পারে। তবে এই কারন গুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো চুলের যথাযথ যত্ন না নেওয়া। এছাড়া বর্তমান সময়ে যে সকল শ্যাম্পু আমরা ব্যবহার করে থাকি তার বেশির ভাগই রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরী হয়ে থাকে। কোন শ্যাম্পু বা তেল সম্পর্কে না জেনে ব্যবহারের কারণে চুল পড়ে যায়। মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

মেয়েদের চুল পড়ার কারণ:
আমাদের চুল যদি স্বাভাবিক চুলের চেয়ে রুক্ষ বা শুষ্ক হয় তাহলে ধরে নিতে হবে চুলের পর্যাপ্ত পুষ্টির দরকার আছে। এক্ষেত্রে চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। চুল যদি রুক্ষ হয় তাহলে যে কোন শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না। রাসায়নিক শ্যাম্পু ও তেল ব্যবহারে আমাদের চুলের রং পরিবর্তন হয়, চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয় না, চুল ফেটে যায় এবং তা ঝড়ে পড়ে।

আমাদের এমন শ্যাম্পু নির্বাচন করতে হবে যা চুল শক্ত করার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও যোগান দিবে। এ ধরনের শ্যাম্পু সাধারণত লেনোলিন অথবা ভ্যাসলিন মিশিয়ে তৈরি করতে হয়। ডিম দিয়ে তৈরী শ্যাম্পু রুক্ষ চুলের জন্য সবচেয়ে উপযোগী একটি শ্যাম্পু। যা চুল পড়া রোধে আমরা ব্যবহার করতে পারি।  এছাড়া ও আরো বিভিন্ন কারণে আমাাদের চুল পড়ে। যেমন:

হরমোনাল পরিবর্তন: মেয়েদের চুল পড়ার একটি প্রধান কারণ হল হরমোনাল পরিবর্তন। প্রথমবারের মাসিক হওয়ার পর থেকে, গর্ভাবস্থার জন্য ও বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তনের ফলে চুলের গুনগত অবস্থা পরিবর্তিত হয়ে চুল ঝড়ে পড়ে। এজন্য আমাদের এই সময় গুলোতে চুলের প্রতি যন্তশীল হতে হবে।

পুষ্টির অভাব: আমদের শরীরে পুষ্টিকর খাবারের অভাব হলে এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যা হলে চুল ঝড়ে পারে। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ফলে, পুষ্টিকর গুনাবলী আমাদের চুল ঝড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এবং চুলের কোমলতা ও মসৃণতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই চুল ভালো রাখতে প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

প্রসাধনীর সঠিক নির্বাচন না করা: আমরা চুলের যত্নে নানা প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। যার মধ্যে শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও তেল অন্যতম। অনেক শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং তেল চুল যত্নে ব্যবহার করার ফলে আমাদের চুলের ঝড়ে পড়তে পারে। তার কারণ হলো সঠিক প্রসাধনীটি ব্যবহার না করা। এছাড়া প্রসাধনী গুলোতে অস্বাস্থ্যকর রাসায়নিক কেমিক্যাল ব্যবহারে হয় যা চুল রুক্ষ করে, চুলের মাথা ফেটে যায় এবং চুল ঝড়ে পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পরিচর্চা না করা: আমাদের প্রতিদিনের যেকোন একটি ভাগে চুলের পরিচর্যা করা উচিত। তবে ২ থেকে ৩ দিন পর পর চুলে তেল না দেওয়া, অনেক বেশি তাপমাত্রায় চুল হিট দেওয়া এবং গরম পানি চুলের অবস্থা অস্বাস্থ্যকর করে তোলে। আর এই কারনেই অকালে চুল ঝরে পড়ে। তাই চুলের সঠিক পরিচর্চা করা উচিত।

মেয়েদের চুল পড়ার প্রতিকার:
আমাদের চুলের পুষ্টির জন্য ডিম, লেমোলিন বা ভেসলিন প্রয়োজন হয়। এই সকল পুষ্টি উপাদান কেবলমাত্র শ্যাম্পুতে পাওয়া যায়। এছাড়া চুলের সঠিক পুষ্টি যোগতে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনারও প্রয়োজন হয়। কন্ডিশনের লাগিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া চুলের গোড়া শক্ত করতে এবং চুল ঝরে পড়া রোধে জয়তুনের তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই তেল চুলে গরম করে লাগাতে হয়। গরম তেল মালিশ করার আগে চুলের গোড়ায় গরম ভাপ দিলেও উপকার পাওয়া যায়। তার জন্য গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় পেছিয়ে রাখতে পারেন অথবা গরম পানি করে একটি পাত্র রেখে তাতে মাথা ঝুকিয়ে কিছুক্ষণ বসা যেতে পারে। এতে চুলের গোড়ার ক্যাশ মূল খুলে যায়।

এবার গরম তেল মালিশ করে তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গরম তেল ব্যবহারে পূর্বে অবশ্যেই লক্ষ রাখতে হবে যেন তেল হালকা গরম হয়। হালকা গরম অলিভ অয়েল বা জয়তুনের তেল চুলের জন্য খুব উপকারি হয়ে থাকে। উপরিউক্ত ‍উপায় গুলো অনুসরণ করে এর থেকে পরিত্রান পাওয়া যেতে পারে। আশা কারি মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

কোন ব্যায়াম করলে চুল পড়া বন্ধ হবে

ব্যায়াম করে চুল পড়া বন্ধ হয় শুনে অবাক হচ্ছেন? কিন্তু চুলের এমন কিছু ব্যায়াম রয়েছে যা চুল পড়া বন্ধ করতে সহায়ক হতে পারে। এই সকল ব্যায়াম করার মাধ্যমে চুলের বৃদ্ধি এবং চুল ঝরে যাওয়া সমস্যা সমাধানে উকারি হতে পারে।  নিচে কিছু ব্যায়ামের ধরন উল্লেখ করা হলো যা চুলের পড়া বন্ধ করতে সহায়ক হতে পারে:

ব্রাশ করা: চুল ব্রাশ করা হলো চুলের ব্যায়াম নিয়মিত ও সঠিকভাবে চুল ব্রাশ করলে তাতে একদিকে যেমন চুল পরিষ্কার হয় অন্যদিকে চুলের ভালো ব্যায়ামও হয়ে থাকে। চুলের জন্য ভালো চিরুনি নির্বাচন করতে হয়। যে যে চিরুনির দাঁত লম্বা ও গোল হয় এছাড়া মাথার ত্বকে কোন ধরনের ব্যথার অনুভূতি দেয় না। সেই চিরুনি বা ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত।

এতে চুল ছিঁড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। ব্রাশ করতে হবে সব সময়ে সামনে থেকে পিছনে। সাধারণত সকালে ও রাতে শোয়ার আগে দুবার করে চুল ব্রাশ করা দরকার। শুকনো ও তেলতেলে দুই রকম চুলের জন্যই একই পদ্ধতি।

স্ক্যাল্প ম্যাসেজ করা: স্ক্যাল্পে ম্যাসেজ করার ফলে চুল ঝরে যাওয়া থেকে রক্ষা হয় এবং চুল বৃদ্ধি করতে অবদান রাখে। আমাদের উচিত দিনে অন্তত একবার স্ক্যাল্প ম্যাসেজ করা।

যোগব্যায়াম: চুল পড়া রোধে আমরা নানা যোগব্যায়াম করতে পারি। তার মধ্যে ইয়োগা অন্যতম যা চুলের আদ্রতা বজায় রাখে এবং চুল বৃদ্ধির জন্য খুবই উপকারী হয়ে থাকে। তাই নিয়মিত যোগব্যায়াম করুন।

হেয়ার টাই বন্ধ: হেয়ার টাই হলো যে মুষ্টি করে এক জায়গায় বাধা। হেয়ার টাই এর ফলে চুল তার স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে না। অতএব হেয়ার টাই বন্ধে চুল তার স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে এবং চুল পড়া থেকে রক্ষা করে।

নিরামিষ ডায়েট: আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ ও পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন যা চুলের যত্ন ও বৃদ্ধির জন্য কার্যকারী হয়ে থাকে। এই সমস্ত ব্যায়াম ও নিরামিষ ডাইটের মাধ্যমে চুল ভালো রাখা এবং চুল পড়া বন্ধ করা যেতে পারে।

মাথার চুল পড়া বন্ধ করার উপায়

বর্তমান সময়ে চুল পড়া বন্ধ করার নানা ‍উপায় রয়েছে। তা নিয়মিত অনুসরণ করলে চুল পড়া রোধ হয়। মাথায় বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ হওয়ার ফলে আমাদের চুল পড়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এই সংক্রমণের উপযুক্ত চিকিৎসা করতে হবে। এজন্য ঔষধিযুক্ত কোন টনিক বা মলম লাগাতে হতে পারে। অনেক সময় মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চার বাড়িয়ে দিলেও অনেক সময় সমস্যার সমাধান হয়।

চুল খুব বেশি উঠলে, মেহেন্দি, শিকাকাই, রিঠা আমলা, বা অন্যান্য জড়ি-বুটির রস ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার স্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে। এছাড়া এগুলোর বিশেষ গুণ হলো শরীর খুব তাড়াতাড়ি এই উপাদান গুলো গ্রহন করে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগীয়ে থাকে।

চুলে গরম তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। নারকেলের তেল, তিলের তেল, জয়তুন বা অলিভ অয়েল নিয়মিত লাগালেও উপকার পাওয়া যায়। আমড়ার তেলও ব্যবহার করা যেতে পারে। এই উপাদান গুলো ব্যবহার করার সময়ে সাবানের বদলে আমলকি ব্যবহার করুন। এতে চুল উঠা বন্ধ হবে পাশাপাশি মসৃণ ও মোলায়েম হবে।

চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম

চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন তেলের ব্যবহার করা হতে পারে, যেমন:
  • নারিকেল তেল
  • অলিভ অয়েল
  • আলমন্ড অয়েল
  • জোজোবা অয়েল
  • টি অয়েল
এই তেলগুলি ব্যবহার করে মাথার চুল ভালো রাখে পাশাপাশি চুলকে মসৃন করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে ।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলে ব্যবহারের নিয়ম

ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারে চুলের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে এবং চুলের পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। নিচে কিছু ভিটামিন ই ক্যাপসুল সঠিকভাবে ব্যবহার আলোচনা করা হলো:

  • পানিতে বরিক পাউডার(এক চামচ) ও দুই থেকে তিনটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। যার মাধ্যমে খুব অল্পদিনেই মাথার খুশকি দূর হয়।
  • রাতে শোয়ার সময় দু চামচ নারকেল তেলের মধ্যে এক চামচ লেবুর রস ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে নিন। ভালো করে আঙ্গুলের ডগা দিয়ে ঘষে ঘষে লাগান সকালে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মাথার খুশকি দূর হবে এবং চুলও ঘন হবে।
  • ডিম ভালো করে ফাটিয়ে নিয়ে নিয়ে(হলুদ অংশ) তাতে দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ওয়া হালকা গরম পানি মিশিয়ে আঙ্গুলের ডগা করে চুলের গোড়ায় গোড়ায় লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে হালকা গরম জলে বা গরম ঠান্ডা মাথা ধুয়ে ফেলুন।
  • দইয়ের মধ্যে সামান্য লবণ মিশিয়ে(এক কাপ দুইয়ে এক চামচ লবণ) ও দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে একটু পরে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার খুশকি দূর হবে, চুল ঘন হবে এবং চুল হবে মসৃণ।

ছেলেদের অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান

ছেলেদের অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধানের জন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে পারেন:
এক চামচ মেহেন্দি পাতার গুড়া নিন। এক চামচ শুকনো আমলকি ও চা পাতা নিন। তিনটি জিনিস নিয়ে একটা গরম জলে ভিজিয়ে নিন। এবার ওই কাপের মধ্যে ১/৪ চামচ লবণ ও হাফ চামচ গোলাপজল দিন। একটা লেবুর রস দিন। মিশ্রণটাকে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা ফেলে রাখুন। তারপর আস্তে আস্তে আঙ্গুলের ডগা করে চুলের গোড়াতে লাগান। এতে অসময়ে ঝরা চুল পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা হবে। চুল পেকে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

শুকনো আমলকি চূর্ণ তে সামান্য জল দিয়ে পেস্ট এর মত করে মাথায় লাগান। ১৫ মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে মাথা ধুয়ে ফেলুন। কয়েকবার লাগালেই অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ হবে।

পিয়াজের রস চুলের এক মহা ঔষধ। চুল ঝরে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পেঁয়াজের রসের জুড়ি নেই । পিঁয়াজের রস চুলে মাখলেঅতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যার সমাধান হয়। এমন কি পিয়াজের মাথায় ঘষলে নতুন চুলও গজায়।

এরণ্ডের তেল, এক আউন্স চন্দনের গুড়ো, পেশা কফির বীজ এক আউন্স নিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট গরম করুন। তারপর ছেঁকে নিয়ে শিশিতে ভরে রাখুন। কয়েক দিন পর পর রাতে মাথায় মেখে শুয়ে পড়ুন এবং সকালে উঠে মাথা ধুয়ে ফেলুন এতে করে চুল ঝরে পড়া অনেক কমে যাবে। পাকা চুল কালো হয়ে যাবে।

কি খেলে চুল পড়া বন্ধ হয়

চুল পড়া বন্ধ করার জন্য সুষম খাদ্য গ্রহন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা অনেক বেশি ‍গুরুত্বপূর্ন। কিছু খাবার এবং খাবারের উপকারিতা নিম্নলিখিত হতে পারে:

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: প্রোটিন যুক্ত খাবার চুল পড়া বন্ধে সাহায্য করে। মাছ, ডিম, দুধ, দই, পালং সহ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে চুল পড়া বন্ধ হয়।

ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার: চুল পড়া বন্ধে এবং চুল প্রবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত মাত্রায় ভিটামিন এ ও সি, ইয়োডিন, ফোলিক এসিড ও জিংক ধারণকারী খাবার খাওয়া উচিত। পুষ্টিকর ফল, সবজি, মুসুর ডাল, গম, শসা, সফেদ মাছ এবং খেজুর এই ধরনের খাবার খাওয়ার মাধ্যমে চুল পড়া বন্ধ করা যেতে পারে।

পানি পান: চুল পড়া রোধে অধিক পরিমানে পানি পান করতে হয়। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। পানি মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে এবং চুল বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন: তেল, চিনি এবং অতিরিক্ত মিষ্টি এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলোর ব্যবহারে চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয় না। চুলে নানা ধরনের সংক্রমণের বাসা বাধতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত খাবার এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের সাথে চুলের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ন।

চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায়

কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায় :
চায়ের লিকারের সাথে লেবুর রস: চায়ের লিকারের সাথে লেবুর কয়েক ফোঁটা রস মিশিয়ে মাথা ধোয়ার পর ওই লিকার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিবেন। এতে চুল পড়া কমবে, চুল চকচক করবে এবং চুল ঘন হবে।

শুকনো আমলকি: শুকনো আমলকি দুধে চার-পাঁচ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখবেন। নরম হলে বেডে পেস্ট এর মত করে মাথায় বিলি কেটে চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে লাগাবেন। অন্ততপক্ষে এক ঘন্টা রেখে মাথা ধরে ফেলবেন। আমলকির সাথে কয়েকটা মেহেদি পাতা দিতে পারলে খুব ভালো হয়। এই পদ্ধতিতে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুল খুব তাড়াতাড়ি ঘন হয়।

দুর্বাঘাস ও নারকেল তেল: এক মুঠো দুর্বাঘাস খাটি নারিকেল তেলের মধ্যে সারারাত ভিজিয়ে রাখবেন। পরের দিন এপ্রিল রোদে ভালোভাবে গরম করে নিয়ে মাথায় বিলি কেটে লাগালে চুল ঘন হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়। এ তেল বোতলে রেখে দিতে পারেন। তবে রোজ রোদে দিতে হবে। মাথায় দেওয়ার সময় রোদে গরম করে নিবেন।

পুষ্টিকর খাবার: তাজা ফল এবং সবজি, মাংস, মাছ, ডাল, হলুদ, সোয়া বা তিলের তেল, বাদাম বা নারিকেলের তেল, গাজরের জুস ইত্যাদি চুলের উপকারিতা বা ঘন করার জন্য উপযোগী।

উপরোক্ত উপায়ের আপনি আপনার চুলের যত্ন রাখতে পারেন এবং চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায় হিসেবে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। সমস্যা যদি নিয়ন্ত্রিত না হয় বা চুলের সমস্যা অনেক বেশি হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

লেখকে শেষ মন্তব্য: মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার

উপরিউক্ত আলোচনায় মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আমি আমার স্বল্প জ্ঞান দিয়ে চেষ্টা করেছি আপনাদের সমস্যা গুলো বোঝার এবং তার সমাধান করার। আশা করছি উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো থেকে আপনি উপকৃত হবেন।

চুল যেহেতু আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে সেহেতু আমাদের উচিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কোন কিছু ব্যবহার বা গ্রহণ করার। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পুরো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনার উপকারে আসে তাহলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না এবং আপনার বিশেষ কোনো মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url